অনলাইনে নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির দুই কলেজছাত্রীর যৌনতার ফাঁদে পড়ে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার অনেক মধ্যপাচ্য প্রবাসী সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এমন একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে নোয়াখালী জেলার সিআইডি পুলিশ দুই কলেজছাত্রীসহ তাদের সহযোগী বিকাশ এজেন্টের এক দোকানদারকে প্রথমে আটক করে।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কুয়েত প্রবাসী সাইফুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা সিআইডি পুলিশ কার্যালয়ে অভিযুক্ত দুই কলেজছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরে ভুক্তভোগী সাইফুল বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সুধারাম থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন—বেগমগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে মারজাহান আক্তার (১৯), সেনবাগ উপজেলার কেশার পাড় ইউনিয়নের লেদুয়া গ্রামের গোলাম মাওলার মেয়ে শাহজাদী মজুমদার (২০), নোয়াখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জয়কৃঞ্চপুর গ্রামের হোসেন আহমদের ছেলে বিকাশ এজেন্ট দোকানদার মোশারফ হোসেন মনু।
অভিযুক্তদের আটকের পর তাদের ব্যবহৃত বিকাশ একাউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়।
জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কুয়েত প্রবাসী সাইফুল ইসলামকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রুপের জালে পেলে কয়েক দফায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই দুই রুপসী। এছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের মধ্যপাচ্য প্রবাসী তানভীর হোসেন, মোস্তফা চৌধুরী নামে দুই প্রবাসীর থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এ নারী চক্র। এ ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের বেশ কয়েকজন যুবক এদের জালে ফেঁসেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।
নোয়াখালী জেলা সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক শাহ আলম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ রয়েছে নোয়াখালীতে একাধিক সক্রিয় নারী চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে ইউরোপ প্রবাসীর কন্যা সেজে মধ্যপাচ্য প্রবাসী যুবকদের বিয়ে করে ইউরোপে নেওয়ার প্রলোভনে পেলে প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়। আবার প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাতিয়ে ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসআপ, ম্যাসেঞ্জারে সেক্স করে তা কৌশলে ধারণ করে নেয়। পরে এসব ছবি, ভিডিও অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে হুমকি ধামকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ছাড়াও গরিব অসহায় লোককে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তের কথা বলে মানবিক আবেদন দেখিয়ে, অসুস্থ রোগীদের বানোয়াট ছবি দেখিয়ে সাহায্যের নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়। এজন্য তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকগুলো আইডি ব্যবহার করে। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা আইডিগুলো পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়।
বাহরান প্রবাসী কবির হোসেন ফোনে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, গরিব অসুস্থ লোককে সাহায্যের কথা বলে তার কাছ থেকে আট হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি ইমুতে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।
Leave a Reply