নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ৩ নং ইউনিয়ন পরিষদ ৪ নং ওয়ার্ডের বহরমপুর (মাদ্রাসা পাড়া) গ্রামে এই পরিবার। মোছাঃ আসমা বেওয়া (৬৫) স্বামী মৃত কলিমুদিন (নেংরু) মোহাম্মদের সংসারের আসে ৬ টি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান আসে। গরীবের সংসার ভালোই চলছিল, কিন্তু স্বামীর অকাল মৃত্যুতে হয়ে যায় দিশেহারা । মৃত কলিমউদ্দিন ওরফে নেংরুর তিন মেয়ে স্বামীর সংসারে থাকলেও প্রতিবন্ধী মোছাঃ আনুরজান বেগম (৩০), মোছাঃ আর্জিনা পারভীন ( ২৫), মোছাঃ সোনালী বেগম (২২) বৃদ্ধা আসমা ও আরজিনা বেগম এর দুটি ছোট বাচ্চা নিয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। মোছাঃ আনুরজান এর বিয়ে হয়েছিল রংপুর মিঠাপুকুরে স্বামীঃ বাদশার সাথে। এক ছেলে সন্তান জন্মের দুই বছর পরে তার দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে যায় তাই স্বামী বাদশা তাকে ছেড়ে চলে যায় মিঠাপুকুর রংপুর এ। আনুরজানের ছেলের জন্মের ৫বছর পরে মৃত্যু হয়। বাদশা আনুরজান কে বিয়ে করে বহরমপুর বসবাস করতো। মোছাঃ আর্জিনা বেগম স্বামী ইয়াসিন আলি গ্রাম কামারপুকুর সাথে বিয়ে হয়ে কিছু ছয় বছর সংসার করে দুটি সন্তান হয়। মোছাঃ সোনালী বেগম হরিপুর তারবাগান, স্বামীঃ নুর ইসলাম সাথে বিয়ে হয় কিন্তু দুই বছর পরে সেও দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে এজন্য স্বামী নুর ইসলাম তাকে তালাক দেয়। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ৬ মেয়ের মধ্যে ৩ মেয়ের দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে। বৃদ্ধা আসমার একমাত্র আয়ের উৎস স্বামী তাকেও হারিয়ে নিদারুন কষ্টে দিন কাটছিল। তারপরে আবার তিন মেয়ের মধ্যে আর্জিনা বেগমের এক ছেলে ( ৫)ও মেয়ে(৩) আছে। এভাবে জামাই গুলো সংসারে সবাই কে ফেলে চলে যাবে কখনো ভাবেনি। অর্ধহারে অনাহারে কাটে দিনের পর দিন সিদ্ধান্ত নেয় পরের বাড়িতে কামলা খাটে সংসার চালাবে। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় কেউ কামলা ও নিতে আগ্রহী নয়। এখন ঝিয়ের কাজ ও নানান ভাবে জীবিকা নির্বাহ করে।মোছাঃ আসমা বেওয়ার স্বামী ১৫/১৬ বছর আগে মৃত্যু বরণ করার পরেও স্বামীর অবর্তমানে বহু কষ্টে অন্ধ মেয়ে গুলোর ভরণপোষণ করে আসছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে প্রাদূর্ভাবে কেউ ঝিয়ের কাজও নেয় না। অসহায় মানুষের তালিকা প্রস্তুত হলেও তাদের কেউ খোঁজ নেয়নি। ত্রান সামগ্রী পাওয়ার আশায় আশায় কত বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছেন। তবুও বৃদ্ধা আসমার খবর নেই নি কেউ। এই সংবাদ পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ছুটে যায় বৃদ্ধা আসমার পরিবারের কাছে। প্রকৃত খোঁজ খবর নিয়ে তাৎক্ষনিক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান কে বিষয়টি অবহিত করলে যৎসামান্য ত্রানের ব্যবস্থা করে।
ঐ বৃদ্ধা সাংবাদিকগণের নিকট আবেদন করেন, আমি হয়তো এক দিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো তখন আমার অন্ধ মেয়ে গুলোর দেখা-শোনা করবে কে? এখনো নিদারুণ কষ্টে আছি, কেউ তো আমাদের খবর নেয় না। এখন তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে তাও পাচ্ছি না।
আসমা বেওয়া সাংবাদিক দের বলেন বাবা তোমরা কে আমি জানি না তবে তোমাদের নিকট আমার দাবি তিন জন অন্ধ মেয়ের পাশে দাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তবান মানুষের নিকট আবেদনটা তুলে ধরবে।
Leave a Reply