নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় দিনমজুর-অসহায়দের পাশে বিত্তবানদের আরও বেশি সাহায্য করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আশেপাশের দরিদ্র মানুষের সাহায্য করুন। তাদের পাশে দাঁড়ান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, আমদানি-রফতানি সীমিত হয়ে পড়েছে। তাই এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। ফসল ফলাতে হবে। ভিডিও কনফারেন্স এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ ৬৪ জেলা প্রশাসন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুজিব বর্ষকে ঘিরে অনেক পরিকল্পনা করেছি। কিন্তু অদৃশ্য শক্তি করোনার কারণে আমাদেরকে সেটা বন্ধ রাখতে হয়েছে। দেশটা এগিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের লক্ষ্য ছিল এ বছরের মধ্যে দারিদ্র্য সীমা আরো কমানোর।
তিনি বলেন, ‘কোনও মানুষ যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়। সরকার সেই চেষ্টা করছে। আপনারা মনোবল শক্ত করে যে কোনও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবেন।’
উল্লেখ্য, সারাদেশে করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে এককালীন আড়াই হাজার টাকা করে এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা নগদ সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে। বিকাশ, রকেট, নগদ ও সিওর ক্যাশের মতো মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে সাড়ে ১২শ’ কোটি টাকার তহবিল বিতরণ করা হবে। প্রতি পরিবারে ধরা হয়েছে চার জন সদস্য, সেই হিসাবে এই নগদ সহায়তায় উপকার ভোগী হবে দুই কোটি মানুষ। প্রতিদিন ১০ লাখ মানুষ নগদ সহায়তা পাবেন এবং পুরো তহবিল ১৪ থেকে ১৮ মে’র মধ্যে বিতরণ করা হবে।
জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি এই সহায়তাপ্রাপ্তদের তালিকা তৈরি করেছেন। ভাতা পাওয়ার তালিকায় আছেন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষ।
তালিকাভুক্তদের মধ্যে নগদ, বিকাশ, রকেট, এবং শিউরক্যাশ এর মাধ্যমে সরাসরি চলে যাবে এই টাকা, ফলে বাড়তি কোনও ঝামেলা পোহাতে হবে না তাদের। টাকা পাঠানোর খরচ সরকার বহন করবে। এই টাকা উত্তোলন করতে ভাতাভোগীদের কোনও খরচ দিতে হবে না।
এসময় প্রধানমন্ত্রী মোবাইল ব্যাংকিং/অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্বলিত বোতাম টিপে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেন।
Leave a Reply