ডেস্ক রিপোর্ট:
১৯৩৭ সালের ০৫ জুন তারিখে তৎকালীন ঢাকা (বর্তমানে নরসিংদী) জেলার রায়পুরা থানার অত্যন্ত প্রত্যন্ত ইমামদিরকান্দি গ্রামে জন্ম আমার। বাবা মরহুম আবদুল জব্বার (কানু মিয়া) একজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন। নিজ এলাকায় পরোপকারী ও সমাজসেবক হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। আমার মা ছিলেন একজন সুগৃহিনী। বৃহত্তর/যৌথ পরিবারের প্রথম সন্তান হিসেবে আমার শৈশব ছিল মা-বাবা ও চাচাদের আদর-স্নেহ-ভালবাসায় পরিপূর্ণ। বাবার প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়েই আমার পড়াশুনার হাতেখড়ি এবং সেখানে মেধার পরিচয় দিয়েই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করি। সেই বৃটিশ আমলে আমাদের রাস্তাঘাটবিহীন প্রত্যন্ত গ্রামের ১০/১২ মাইলের মধ্যে কোন উচ্চ বিদ্যালয় না থাকায় এবং নিরাপত্তার কথা ভেবে আমার পিতা অন্যত্র না পাঠানোয় আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সেখানেই থেমে যায়।
ঐ যুগের প্রথা অনুযায়ী ১৯৫৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে একই থানার বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের উদীয়মান সমাজসেবক ও রাজনৈতিক কর্মী সাইদুর রহমান সরকার (ছন্দু মিয়া)’র সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হই। মা-বাবা আর চাচাদের আদরের স্বর্গ ছেড়ে এক জাঁদরেল শাশুড়ির কঠোর শাসন আর স্বামীর ভালবাসায় মিশ্র এক জীবন কাটছিল আমার। বিয়ের পর দিনকে দিন স্বামীর সমাজসেবামূলক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড বাড়তে থাকে। শিক্ষানুরাগী স্বামী নিজের পৈত্রিক জমিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন; বাড়ী বাড়ী গিয়ে ছাত্র যোগাড় করেন; বিনা বেতনে বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন। রায়পুরা থানার অনগ্রসর চর এলাকায় ৬টি ইউনিয়নের উন্নয়নে তিনি আত্মনিয়োগ করেন।
এক পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন কর্মী হিসেবে নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে এলাকায় চোর-ডাকাত ও সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণের (স্থানীয়দের ভাষায় ‘চোরের সংগ্রাম’) নেতৃত্ব দিয়ে এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এসময় চোর-ডাকাতদের দল একাধিকবার আমাদের বসতঘরে আগুন দিয়ে এবং একদিন সংঘবদ্ধভাবে বাড়ীতে আক্রমণ করে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে। আমার তাৎক্ষণিক কৌশলে তিনি বেচেঁ যান।
তারপর এলো সেই উত্তাল ১৯৭১ সাল। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সভাপতি হিসেবে স্বামী মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন; আশ্রয় ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন। আমাদের বাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। মনে আছে সেবছর প্রচুর ‘ক্ষেত কুমড়া’ ফলেছিল। মুক্তিযোদ্ধা ও আশ্রয়প্রার্থী বিপুল সংখ্যক মানুষকে ভাত ও ক্ষেত কুমড়াসহ ডাল দিয়ে আপ্যায়িত করা হতো। সেই দুর্যোগের সময় সে সাধারণ খাবারই তাদের কাছে অমৃত সমান ছিল। গৃহকর্ত্রী হিসেবে বিপুল সংখ্যক অসহায় মানুষের খাবারের ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। সেসব দিনের কঠিন পরিশ্রমের কথা মনে হলে আজও শরীরে ব্যথার অনুভূতি হয়।
অনেক রক্ত আর অশ্রুর বিনিময়ে অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ দেশ স্বাধীন হয়। স্বামী দেশ গঠনের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওদিকে আমার জনপ্রতিনিধি বাবাও সাধ্যমতো দেশ ও দশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছিলেন।
এদিকে ১৯৭২ সালে শ্বাশুড়ি অসুস্থ হওয়ার পর নাতজামাই দেখার ইচ্ছে পোষণ করায় অনিচ্ছাসত্ত্বেও দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া বড় মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হই। স্বামীর রাজনৈতিক ও সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডের ব্যস্ততা আর নতুন জামাতার আদর-আপ্যায়নে দিন কেটে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে আমার আশা-ভরসার স্থল আমার বাবা অন্য ভুবনে পাড়ি জমান। আমার সর্বশেষ সন্তানের বয়স তখন মাত্র ১২ দিন। তখনও জানতাম না যে, নিয়তি আমাকে নিয়ে এক কঠিন খেলায় মেতে উঠবে। পিতার মৃত্যুশোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই মাত্র ৮ মাস পর ১৯৭৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর প্রিয়তম স্বামী মাত্র ৪২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে পিতা ও স্বামীকে হারিয়ে অকুল সাগরে পড়ে যাই। আজ থেকে প্রায় অর্ধ-শতাব্দী আগে একজন স্বল্প শিক্ষিত গ্রামীণ মুসলিম নারীর পিতা ও স্বামী হারানো মানে মাথার উপর থেকে শুধু ঘরের চাল নয়, আকাশও সরে যাওয়া। ছয়টি নাবালক সন্তানসহ মাত্র ৩৬ বছর বয়সে বিধবা হওয়া গ্রামীণ নারীর জন্য আর্থিক ও নিরাপত্তা সমস্যাসহ যত রকমের সমস্যা হওয়া সম্ভব সবই আমাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পূর্বেই শাশুড়ির নাতজামাই দেখার শখ পূরণের জন্য সবচেয়ে বড় মেয়েটিকে খুবই অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছিলাম। স্বামীর মৃত্যুর সময় দ্বিতীয় সন্তান (বড় ছেলে) মাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। এরপর বাকী ৪ জনের বয়স সহজেই অনুমেয়। সর্বশেষ সন্তানের বয়স তখন মাত্র ৮ মাস।
একাকী এক কঠিন জীবন-সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয় আমাকে। একেতো মুসলিম পরিবার, আবার স্বামীর ব্যাপক পরিচিতি; সুতরাং জীবন-জীবিকার সন্ধানে ঘরের বাইরে কোন কিছু করা ছিল অসম্ভব। জমিজমা মোটামুটি থাকলেও অব্যবস্থাপনার জন্য প্রায়ই প্রত্যাশিত ফসল পাওয়া যেত না। দেখাশুনার কেউ নেই বিধায় বর্গাদারদের অনেকেই এসে বলতো, ‘‘এবার মোটেই ফসল হয়নি’; কাজেই কিছুই দিতে পারবো না।’’ পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করলো যখন পুরুষতান্ত্রিকতায় ভর করে মূলতঃ জমি-জমা অবৈধভাবে ভোগদখলের আশায় স্বামীর বাড়ীর কেউ কেউ বললেন, “ছেলে-মেয়েরা আমাদের বংশের; তাদেরকে আমরা দেখবো। তুমি বাপের বাড়ী চলে যাও।’’
উল্লিখিত যাবতীয় অন্যায় চাপ অগ্রাহ্য করে নাবালক সন্তানদের বুকে আগলে মাটি কামড়ে পড়ে থাকি প্রিয় স্বামীর ভিটায়। সন্তানদের বেড়ে উঠার জন্য সারা বাড়ীতে শাক-সবজি ফলমূল চাষ ও হাস-মুরগী গরু-ছাগল পালন শুরু করি। কোন ক্যাশ-ইনকাম না থাকায় নিজের ভিটেবাড়ীর সর্বোত্তম ব্যবহার করে কোনরকমে সন্তানদের আহারের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। যখন সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য অর্থের প্রয়োজন হলো তখন নিজের শখের স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করতে বাধ্য হলাম। স্বর্ণালঙ্কার খোয়া যেতে পারে এ আশঙ্কায় দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে নদী ভাঙ্গনে জর্জরিত চাচাতো ভাইদের (নিজের কোন প্রাপ্তবয়স্ক ভাই ছিল না) নিকট প্রদান করতাম স্বর্ণকারের কাছে বিক্রি করে দেয়ার জন্য।
সন্তানদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে গাভী পালন করেছি। ঘটনাক্রমে একবার ৪টি গাভী কাছাকাছি সময়ে বাচ্চা দিল। আর্থিক দুরবস্থা থাকা সত্ত্বেও মরহুম স্বামীর সামাজিক মর্যাদার কারণে অতিরিক্ত দুধ বিক্রি করে সংসারের অন্য প্রয়োজন মেটানো কঠিন ছিল। একদিকে স্বামীর অকাল মৃত্যুতে হঠাৎ কঠিন দুর্দশায় পতিত হওয়া, অন্য দিকে স্বামীর ব্যাপক পরিচিতি ও সুখ্যাতি- এ দুইয়ের মধ্যে অনেক কৌশল অবলম্বন করে সন্তানদের মানুষ করতে হয়েছে।
এবার সন্তানদের নিয়ে কিছু বলতে চাই। স্বামীর মৃত্যুর কয়েক মাস পরেই বড় মেয়ে একটি মৃত সন্তান প্রসব করে। একদিকে পিতা ও স্বামীর অকাল মৃত্যু, অন্যদিকে অল্প বয়স্ক মেয়ের প্রথম সন্তানের মৃত্যু; আর্থিক অনটন সব মিলিয়ে এক দুর্বিসহ অবস্থা। এ দুঃসময়ে দায়িত্বশীল ছেলের মতো এগিয়ে আসে বড় জামাতা। মেধাবী বড় ছেলেটি তখন দশম শ্রেণিতে। গ্রামের স্কুলের বদলে তাকে জেলা শহরের সবচেয়ে ভালো স্কুলে ভর্তি করে নিজের বাসায় নিয়ে যায় বড় জামাতা।
৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ২য় ছেলেকে তখন সংসার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়। কোন ক্যাশ-ইনকাম না থাকা একটি সম্পূর্ণ কৃষি নির্ভর পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে আমার এ মেধাবী ছেলেটির লেখাপড়া বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি-তে সে ঠিকই ১ম স্থান অর্জন করেছিল।
সুন্দর চেহারার ২য় মেয়েটি হাইস্কুলে উঠার পর থেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করতে থাকে। পিতার অকালমৃত্যু ও কোন প্রাপ্তবয়স্ক আপন ভাই না থাকায় বখাটেদের উৎপাত এতটাই অসহনীয় হয়ে পড়ে যে, মেয়েকে এস এসসি পরীক্ষার আগে বড় মেয়ের নিকট পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হই। নিরাপত্তাহীনতাজনিত অস্থিরতা আমার মেয়ের লেখাপড়ায় স্থায়ী ক্ষতি করে।
৩য় ছেলেটি শৈশব থেকে মেধার স্বাক্ষর রাখতে শুরু করে। সবসময়ই ক্লাসে প্রথম হতো। বড় জামাতার উদ্যোগে ও বড় ছেলের চেষ্টায় ৩য় ছেলেটি আমাদের পশ্চাৎপদ গ্রাম থেকে পরীক্ষা দিয়ে স্বনামধন্য মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে চান্স পায় যা পরবর্তীতে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এখানে আমাদের বাড়ীতে থাকা শামসুল হক মাস্টারেরও যথেষ্ট অবদান রয়েছে। বর্তমানে যুগ্মসচিব, এর আগে গোপালগঞ্জে জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক ছিল।
আমার সর্বশেষ সন্তানটি (ছোট মেয়ে) বড়ই হতভাগা। কোনদিন ‘আব্বা’/ ‘বাবা’ ডাকার সুযোগ পায়নি। গ্রাম থেকে এস এসসি শেষ করে ঢাকায় পড়াশুনা করতে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। কিছুদিন আত্মীয়ের বাসায়, কিছুদিন হোস্টেলে থাকা সবই ছিল কঠিন। যাবতীয় প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সে সাফল্যের সাথে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করে।
সন্তান পরিচিতি:
(১) সালেহা ইসলাম:
– বৃদ্ধা দাদীর নাতজামাই দেখার শখ পূরণ করতে গিয়ে খুবই অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যায়;
– শ্বশুরবাড়ীসহ পরিচিতজনের কাছে জটিলতামুক্ত একজন বড় মনের সহজ-সরল মানুষ;
– নিজের ভাই বোনদের কাছে সে এক পরম আশ্রয়;
– ছোট ভাই (পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক, গোপালগঞ্জ)-কে নিজ বাসায় অবারিত আদর-স্নেহে লালন-পালন করেছে।
(২) ফাইজুর রহমান সরকার:
-স্নাতক (সম্মান) (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ)
– চেয়ারম্যান, ফ্ল্যাক্সেন গ্রুপ অব কোম্পানিজ, গাজীপুর/নারায়ণগঞ্জ;
– সভাপতি, সাইদুর রহমান সরকার ছন্দু মিয়া ফাউন্ডেশন;
– প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য, বাঁশগাড়ী কলেজ;
– বাঁশগাড়ী কলেজের ভবন নির্মাণসহ বহু সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তাকারী;
– বিশিষ্ট সমাজসেবক, দানবীর ও পরোপকারী।
৩) সরকার হাফিজুর রহমান (মরহুম) :
– ৭ম শ্রেণিতে থাকাকালেই সংসারের দায়িত্ব গ্রহণকারী
– ডিপ্লোমা প্রকৌশলী (মেরিন টেকনোলজি)- ১ম স্থান অর্জনকারী;
– সঙ্গীতশিল্পী, চিত্রশিল্পী, নাট্যশিল্পী, কারুশিল্পী;
– ব্যতিক্রমী উদ্যোক্তা
– আজীবন জাতির পিতার আদর্শের একনিষ্ট কর্মী
– সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাঁশগাড়ী শাখা;
– সাবেক চেয়ারম্যান, বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ;
– প্রতিষ্ঠাতা, চরমেঘনা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঁশগাড়ী;
– প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীন বাজার, চরমেঘনা, বাঁশগাড়ী;
– বিশিষ্ট সমাজসেবক ও পরোপকারী।
(৪) আঞ্জুমান আরা বেগম:
– এস এসসি পর্যন্ত
– পিতৃহীন অবস্থায় কোন প্রাপ্তবয়স্ক ভাই না থাকায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে শিক্ষা বিঘ্নিত
– স্বামী-সন্তান নিয়ে সুগৃহিণী
– অসম্ভব রকমের নি:স্বার্থ পরোপকারী
– ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত
– এক যুগব্যাপী শয্যাশায়ী শাশুড়িকে অক্লান্ত সেবাদানকারী
৫) মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার:
শিক্ষাজীবন:
– প্রাথমিক বৃত্তি লাভ ও উপজেলা পর্যায়ে পুরস্কৃত;
– ঢাকা বোর্ডে এস এসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১০ম স্থান ও রাষ্ট্রপতির পুরস্কার;
– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর উভয়ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণি;
– জাপানের Kobe University থেকে সর্বোচ্চ গ্রেডে Master of Economics ডিগ্রি অর্জন
কর্মজীবন:
– সাবেক ম্যাজিস্ট্রেট, এসি (ল্যান্ড), ইউএনও, এডিসি
– সাবেক পরিচালক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
– সাবেক জেলা প্রশাসক, গোপালগঞ্জ
– বর্তমানে যুগ্মসচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
(৬) সাবিহা মাহমুদ:
-স্নাতক
– স্বামী-সন্তান নিয়ে সুগৃহিণী
– সমাজসেবক, পরোপকারী
আমার সন্তানেরা অল্প বয়সে পিতৃহীন হয়ে গেলেও আমার তীক্ষ্ণ নজরদারিতে কোন সন্তান বিপথে চলে যায়নি। আলহামদুলিল্লাহ! সন্তানরা স্বার্থক সুখী জীবনযাপন করছেন। সমাজে তাদের পরিচিতি আছে। নানা প্রতিকূলতার কারণে বিশেষ করে মেয়েরা প্রচলিত অর্থে বিশেষভাবে সফল না হলেও পরিচিত সকলের কাছে তারা নিখাদ ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। বলতে পারি আমার কঠিন জীবন সংগ্রাম বৃথা যায়নি। মেয়েদেরকে পড়াশুনার সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিতে না পারলেও সবাই ভালো মানুষ, পরোপকারী হিসেবে পরিচিত; শ্বশুরবাড়ীতে ভালোবাসা ও সম্মানের সাথে আছে।
আলহামদুলিল্লাহ, কষ্টের দিনগুলো পিছনে ফেলে সন্তানদের সুখী জীবন দেখে আমি সুখী, আমি পরিতৃপ্ত। বাগানে কঠোর পরিশ্রমের পর যখন মালি দেখে যে, তার পরিচর্যায় বাগান পুষ্প-পল্লবে সুশোভিত; তখন তার আর পরিশ্রমের কষ্ট মনে থাকে না। আমি এখন সুশোভিত ফুলবাগানের সফল মালি।
সন্তানদের বাসায় বেড়িয়ে, বাড়ীতে গাছ-গাছালির পরিচর্যা করে, বই পড়ে আর ইবাদত-বন্দেগিতে আমার দিনগুলো ভালোই কাটছে। মহান আল্লাহ-তায়ালার প্রতি অশেষ শুকরিয়া।”
—জমিলা খাতুন
স্বামী-মৃত সাইদুর রহমান (ছন্দু মিয়া)
গ্রাম-দিঘলিয়াকান্দি, ইউনিয়ন-বাঁশগাড়ী
উপজেলা-রায়পুরা, জেলা-নরসিংদী
(এই সংগ্রামী নারী ২০২০ সালে নরসিংদী জেলায় ‘সফল জননী’ ক্যাটাগরিতে সেরা জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন।)
Leave a Reply