ডেস্ক রির্পোট
করোনা সংক্রমণে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হয়েছে উৎপাদনের স্বাভাবিক গতি । এই অবস্থায় দেশ পরিচালনা করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চ্যালেঞ্জের মধ্যেও নতুন কিছু পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে; যা এর আগে সেভাবে খুঁজে দেখেনি বাংলাদেশ। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে পিপিই এবং মধ্যপ্রাচ্যে বড় আকারে খাদ্য রপ্তনি। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ওষুধ রপ্তনিরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার; যা এর আগে সেভাবে দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে যে সুযোগ আছে সেটি নিয়ে কাজ করার বিষয়টি চলমান আছে। আমরা আমাদের সব রাষ্ট্রদূত ও মিশনের প্রধানের কাছে সুযোগের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম এবং তারা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই প্রস্তাবগুলোর একটি সামারি করেছি এবং গোটা বিষয়টি ত্বরান্বিত করার জন্য একজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি সবসময় এ বিষয়টি তদারকি করছেন।’
কোথায়, কী ধরনের সুযোগ আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় সব কিছুর সুযোগ নেই। যেখানে যেটার সুযোগ আছে, সেখানেই আমরা সেটির জন্য চেষ্টা করার বিষয়ে বলছি।’
খাদ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় উপহার হিসেবে খাদ্য পাঠিয়েছি। যেমন: আমাদের চাল, আলু, মিষ্টি কুমড়া, সবজি সৌদি আরবে পাঠাচ্ছি। সামনের সপ্তাহে এগুলো যাবে। পিপিই, মাস্ক, খাবার সব পাঠানো হচ্ছে। তাদের বলেছি, তোমরা নিতে পারো।’
এছাড়া আমরা তাদের বলেছি, হালাল খাদ্যের একটি বড় বাজার আছে এবং তারা যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে ফ্যাক্টরি বানাতে পারে বলে জানান মন্ত্রী।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘সম্প্রতি নাইজেরিয়া বাংলাদেশ থেকে প্লেন পাঠিয়ে ওষুধ নিয়ে গেছে; যা আমাদের ওষুধ শিল্পের জন্য ভালো সংবাদ। এছাড়া আমরা আরও কিছু চাহিদাপত্র পাচ্ছি দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশ থেকে। আমরা সুযোগগুলো পর্যালোচনা করছি।’
গোটা বিষয়টি মূলত বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভরশীল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার এখানে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণে আন্তর্জাতিক মানের পিপিই সরবরাহ করছে বাংলাদেশ। এছাড়া বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত বাজারে ১০০টিরও বেশি ওষুধ রপ্তানির জন্য একটি তালিকা দিয়েছে ওই দেশের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পিপিই এর চাহিদা এখন অনেক বেশি এবং ইউরোপ থেকেও আমরা অনুরোধ পাচ্ছি। বেসরকারি খাত এর সুযোগ নিতে পারে।’
খাদ্য রপ্তানির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণ একটি বড় বিষয় এবং বর্তমানে আমাদের কৃষির উৎপাদন ব্যবস্থায় সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে এর সুযোগ আছে।’
ওষুধ রপ্তানির ক্ষেত্রে আরেকজন কর্মকর্তা জানান, পৃথিবীর ৪৮টি স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প সবচেয়ে সক্ষম। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ট্রিপসের সুবিধার কারণে আমরা অত্যন্ত অল্প খরচে ওষুধ উৎপাদন করতে পারি। কারণ আমাদের পেটেন্টের জন্য অর্থ দিতে হয় না।’
এই সুযোগকে কাজে লাগানো সম্ভব বলে মন্তব্য করে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা অনেক দেশে ওষুধ রপ্তানি করি, কিন্তু পরিমাণে কম। এখন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বড় আকারে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারি।’
জোনাকী টেলিভিশন/এসএইচআর/২৮-০৬-২০ইং
Leave a Reply