স্টাফ রিপোর্টার:
মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, মাদক করবো পরিহার শ্লোগান কে সামনে রেখে শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে মানব কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাদকবিরোধী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানব কল্যাণ পরিষদ ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন মাদক বিরোধী কর্মকান্ডে সফলতায় সরকারি দপ্তর থেকে শ্রেষ্ঠ সংগঠকের পুরস্কারপ্রাপ্ত ও সংগঠনের চেয়ারম্যান এম এ মান্নান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা সবকিছুতেই বাংলাদেশের উন্নয়ন উল্লেখ করার মতো। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে মাদকাসক্তি একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। মাদকাসক্তের হার দিন দিন বাড়ছে। যুবসমাজের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। মাদকাসক্তি এমন দুর্বার নেশা যাতে একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে তা পরিত্যাগ করা খুবই কঠিন। মাদকাসক্তি জাতীয় জীবনকে এক ভয়াবহ পরিণামের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক গ্রহণের অন্যতম কারণ বেকারত্ব বা কর্মহীনতা। কথায় আছে, অলস মস্তিস্ক শয়তানের কারখানা। মাদকের নেশা এখন নগরীর প্রাণকেন্দ্র থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও বিস্তার লাভ করেছে। আমাদের দেশে কিশোর সন্ত্রাসীদের ক্রমবর্ধমান দাপটের যে তথ্য সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে তার অন্যতম কারণ মাদক। দেশের সর্বত্র স্কুল-কলেজগামী মেয়েদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা, গুলি বা ছুরিকাঘাতে হত্যা করা, কিংবা সড়ক দুর্ঘটনার আধিক্যের পেছনেও মাদকাসক্তির ভূমিকা অন্যতম। তাই বেকার সমস্যার আশু সমাধান করে তরুণ ও বেকারদের মধ্য থেকে মাদকাসক্তি দূর করতে হবে। তিনি আরো বলেন মাদকের বিক্রি ও বিপণন নিষিদ্ধ করতে হবে। মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা ও প্রকাশ্যে বেচাকেনা রোধে সমাজের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মাদকাসক্তি দূর করতে কিশোর ও যুবসমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে মাদকদ্রব্যের কুফলের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও মিডিয়ার মাধ্যমে মাদকবিরোধী প্রচারণা চালাতে হবে। এম এ মান্নান ভূঁইয়া আরো বলেন, বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে পুলিশ প্রশাসন যেভাবে মানুষের পাশে মানবিক সেবায় দাঁড়িয়েছে ঠিক তখনি এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা বীরদর্পে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে নানা ভাবে হয়রানি করছে মাদক সন্ত্রাসীরা।
মাদক বিরোধী সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের অর্থ সচিব সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সচিব মোহাম্মদ আনিস, দাতা সদস্য রাসেল ইসলাম জীবন, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ইকবাল আহমেদ রিপন, সমাজকর্মী আকবর হোসেন জনি, ইউসুফ আলী প্রধান ও শারমিন আলম প্রমুখ। তারা বলেন সরকার মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতির ঘোষণা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও সমাজকে মাদকমুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে মানব কল্যাণ পরিষদ। তাই আসুন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সবাই সচেতন হই, দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে কাজ করি। জীবনকে ভালোবেসে সবাই মাদকমুক্ত থাকি।
Leave a Reply