1. mostafa0192@gmail.com : admin2024 :
রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ অপরাহ্ন

কোভিড ১৯ ও কিছু কথা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০
  • ২৩৫ বার পঠিত
সময়ের ব্যাবধান বেশী নয় মাত্র তিন মাস ১৩ দিন। আর এরই মাঝে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ২০৯ টি দেশে। ১৫ লাখেরও বেশী মানুষ আক্রান্ত হয়েছে রেকোর্ড অনুযায়ী। এ যেন হুড়মুড় করে বিশ্বের প্রায়ই দেশে ছড়িয়ে পরলো। একজন দুজন করে মানুষের মৃত্যু দিয়ে শুরু আজ সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ১ লাখের এর বেশী ছাড়িয়েছে। এই ভাইরাস থেকে আমরা বাংগালী জাতিও রেহাই পাইনি। এই পর্যন্ত ২১৮ জন আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এরই মধ্যে ২০ জন মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। ৯ম শ্রেণীর বাংলা বইয়ের বিখ্যাত লেখক জহির রায়হানের “হাজার বছর ধরে” উপন্যাসের “ওলা বিবি (ডায়রিয়া) আইছে গ্রামে” কথাটা মনে পড়ে গেল। ১৭২০ সালের প্লেগ রোগের মতো এই রোগ টিও যেন ভয়াবহ রুপ ধারন করলো। এক এক করে প্রতিটি এলাকায় এ রোগ বিস্তার করছে। সাধারন ফ্লু এর থেকেও ভয়াবহ রুপ ধারন করে নিচ্ছে। উপসর্গ অনেকটা ঠান্ডাবাহিত ফ্লু এর মতই কিন্তু এ ভাইরাস তার থেকেও ভয়ানক। শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। গত ১৭ মার্চ সরকার থেকে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষনা এল যেন এই ভাইরাস সবার মাঝে ছড়িয়ে না পরে, বন্ধ করা হলো অফিস আদালত, বন্ধ হয়ে গেল ব্যাংক, প্রাইভেট কোম্পানি,গার্মেন্টস, বন্ধ হয়ে গেল দুর পাল্লার যানবাহন, বন্ধ হয়ে গেল লোকাল যানবাহন।
আমরা বাংগালী আমাদের বলেই বা লাভ কি? আমাদের মাঝে বর্তমানে এই ভাইরাস কমিউনিটি বিস্তার করা শুরু করেছে। এই দোষ কার? এই দোষ কি সরকারের? নাহ এই দোষ সরকারের নাহ। আমাদের যখন সর্ব পর্যায়ের কাজ কর্ম বন্ধের ঘোষনা দিয়ে ঘরে অবস্থান করতে বলা হলো তখনও আমাদের মধ্যে জ্ঞান আসে নি, সরকার থেকে বার বার যখন বলা হচ্ছিলো এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে, মসজিদে নামাজ না পড়ে ঘরে নামাজ আদায় করতে, একসাথে চলাফেরা না করে ঘরে অবস্থান করতে, পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হচ্ছিলো তখন আমরাই সেইগুলার তোয়াক্কা করিনি৷ আজ আমাদের অবস্থা কোথায় দাড়িয়েছে? কমিউনিটি বিস্তার শুরু করেছে। ইতালি,আমেরিকা,স্পেন এর মত উন্নত দেশ ও আমাদের মত অবহেলা করেছিলো আজ তাদের অবস্থা কোথায়? তাদের সরকার নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছে। আমাদের ও কি একই অবস্থা হবে? হওয়াটা স্বাভাবিক কারন আমরাও তাদের মত অবহেলা করছি।তাদের এত এত ভেন্টিলেশন থাকা সত্তেও তারা তাদের জনগন বাচাতে অক্ষম শুধু কেন? শুধু মাত্র তাদের অবহেলার কারনে এই অবস্থা দেখতে হচ্ছে।
“পাপের বোজা সবই বোঝা
নেই কোন সমাধান
রাজা বাদশা হাকিম লড়ছে
তবুও নাই কোন পরিত্রান।
লড়ছে মাঠে রক্ষীবাহিনী
মানুষের নাই জ্ঞান
দিন শেষে নাকে আসবে শুধু
মৃত মানুষের ঘ্রাণ”
আজ ৯ই এপ্রিল। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বলা যায় বর্তমানে আমাদের দেশের মানুষ সচেতন হতে দেখা যাচ্ছে। এই সচেতনতা আগামী ২-৩ সপ্তাহ বজায় থাকলে আমাদের এই কমিউনিটি বিস্তার অনেকটাই থেমে যাবে।
বর্তমান পরিস্থিতি যদি বর্ননা করা হয় তাহলে বলা যাবে যে বর্তমানে আমাদের দেশের প্রতিটি পর্যায় সমাগম বন্ধ হচ্ছে। আর এর পেছনের মুল ভুমিকা পালন করছেন আমাদের দেশের আইন ব্যবস্থা, করছেন সামরিক বাহিনী। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, সাহসীকতার জন্যই আজ আমাদের যেখানে সেখানে মানুষের
সমাগম কমেছে। যেখান থেকে কমিউনিটি বিস্তার এর মুল যায়গা সেই স্থান গুলো বন্ধ হয়েছে। এগুলো সবই আমাদের দেশের হীরোদের কাজ। আর সচেতন কিছু মানুষের। আমরা আমাদের দেশের পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পারি যদি আমরা সরকার
দেওয়া নিয়ম মেনে চলি। হ্যা অবশ্যই আমরা এই ভাইরাস থেকে পরিত্রান পাবো যদি আমরা সচেতন হই। আমাদের সচেতনতাই পারবে আমাদের দীর্ঘায়ূ।
পরিবেশটা যেন থমকে গেছে। গ্রাম, শহরের রাস্তা ঘাট এবং জন জীবন। যেন থমকে গেছে দেশের প্রতিটি স্থান প্রতিটি মুহুর্ত।
থমকে গেছেহ মানুষের নিত্যদিনের চলাফেরাও। বিশেষ করে আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে এবং শহরের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের। খেলাধুলা যা নিজেদের প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারনে যেন সব কিছুই থেমে গেল। ঘর থেকে বের হতে পারছে নাহ কেও। পারছে না কোন পাড়ার বন্ধু বান্ধবিদের সাথে খেলা করতে। পারছে নাহ হেসে খেলে কোথাও যেতেও। ঘরের চার দেওয়ালের মাঝেই বর্তমান তাদের
অবস্থান। বন্ধি জীবন আর কতদিন? এই পরিস্থিতি কবে নাগাদ শেষ হবে? সবার মনেই একি প্রশ্ন। দেশের প্রতিটা মানুষের একই প্রশ্ন। আল্লাহ কবে আবার আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করবে!
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সব মানুষের একই প্রশ্ন দেশ লক ডাউন করে দেওয়া হয়েছে তাহলে মানুষ কিভাবে চলবে? কিভাবে সংসার চালাবে? আমাদের দেশ যেহেতু উন্নয়নশীল রাষ্ট্র এবং এ দেশের প্রায় সবাই কাজ করে নিজের সংসার চালায় সেক্ষেত্রে সব কিছু বন্ধ হওয়ার ফলে কে তাদের এই সংসার চালাবে? কোথা থেকে তারা খাবার পাবে? পরিবারের সদস্যদের মুখে কি তুলে দিবে? যাদের মোটামুটি ভাবে টাকা পয়সা আছে তাদের কথা বাদই দিলাম। যারা গরীব? ভিক্ষাবৃত্তি যাদের একমাত্র পেশা তাদের?
+
তারা কিভাবে চলবে? কে তাদের মুখে খাবার তুলে দিবে? এদের করোনা আর দেশের যুদ্ধ বড় কথা না তাদের পেট হচ্ছে সব কিছুর উপর। এই মানুষ গুলোই যেন আমাদের দুর্বলতা হয়ে এখনো ঘ্রাস মরছে।আমাদের দেশের সরকার এই সব মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন সাহায্যের জন্যে। তাদের ঘরে ঘরে যেন খাবার পৌছে যায় সেই ব্যবস্থা করছেন স্থানীয় সরকার।
সবাই সবার মত যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে, গরীবদের মাঝে খাবার পৌছে দিতে। শুধু এখন আমাদের পালা সরকারের আইন মেনে চলে ঘরের মধ্যে অবস্থান করে সরকারকে সহযোগিতা করা যেন এই করোনা ভাইরাস বিস্তারে বাধা প্রাপ্ত হয়।
জিন্নাতুল ইসলাম পাপ্পু
সাধারন সম্পাদক
সরকারি তিতুমীর কলেজ আর্ট ক্লাব

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Jonaki Media and Communication Limited
Design By Khan IT Host