মোঃ সাইফুল ইসলাম রায়হান , রাজশাহী প্রতিনিধি:
পাট খেতে কাজ করতে গিয়ে নিহত গ্রাম্য চিকিৎসক আব্দুল মান্নান। রাজশাহীর চারঘাটের গ্রাম্য চিকিৎসক আব্দুল মান্নানকে (৭০) গলা কেটে হত্যার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে অগ্রগতি নেই। সোমবার আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ১৮ দিন পার হলেও এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ। দীর্ঘ সময়েও হত্যাকাণ্ডের মামলার অগ্রগতি না থাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। তবে পুলিশ বলছে, ‘গুরুত্ব দিয়ে মামলাটির তদন্ত চলছে। শিগগিরই এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন হবে।’ গত দুই মাসে এই উপজেলায় তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ হত্যার শিকার হয়েছেন ওই গ্রাম্য চিকিৎসক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২২ এপ্রিল উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের কানজগাড়ি এলাকার একটি কলাবাগান থেকে গ্রাম্য চিকিৎসক আব্দুল মান্নানের (৭০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আবদুল মান্নান ওই গ্রামের মৃত করিম মণ্ডলের ছেলে। তিনি ঘটনার দিন বিকেলে নিজের পাট খেতে কাজ করতে যান। পরে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তিনি বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করলে তাঁর স্বজনেরা পাটখেতের পাশের একটি কলাবাগানে তাঁর গলা কাটা মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশ এসে কলাবাগান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এদিকে ঘটনার পরপরই নিহতের ছেলে মাহিম হোসেন লেমন বাদী হয়ে ওই এলাকার রবিউল ইসলাম (৩২) নামের এক ব্যক্তির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে চারঘাট মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ রবিউল ও লিটন নামে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি রবিউলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে লিটনকে ছেড়ে দেয়।
মামলার বাদী নিহতের ছেলে মাহিম হোসেন লেমন বলেন, ‘আমার বাবাকে হত্যার ১৮ দিন পার হলেও পুলিশ কোনো রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি। আমরা এখনো জানি না কে বা কারা আমাদের বাবাকে হত্যা করেছে। অচেনা শত্রুর হাত থেকে বাঁচতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে আমরা দিন পার করছি। চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি পুরো পরিবার। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার পরও তাঁরা হত্যাকাণ্ডের কোনো কূল–কিনারা করতে পারেনি। এর চেয়ে হতাশার আর কিছু হতে পারে না।’
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মীর মাহমুদুন নবী বলেন, ‘আব্দুল মান্নান হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত চলমান আছে। তবে কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেই রহস্য আমরা এখনো উদ্ঘাটন করতে পারিনি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। তারপরও মামলার কার্যক্রম অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই।’
জানতে চাইলে চারঘাট মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টায় আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। সর্বোচ্চ পরিশ্রম করছি ও সময় দিচ্ছি মামলাটি নিয়ে। তারপরও এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোনো রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। পুলিশের সঙ্গে ডিবিও মামলাটা নিয়ে কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই আমরা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।
Leave a Reply