শাহাদাৎ হোসেন রাজু, নরসিংদী :
নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালকে গত ১৩ এপ্রিল ৮০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু করোনা চিকিৎসায় অত্যাবশ্যকীয় ভেন্টিলেশন, সিসিও কিংবা আইসিও, এন ৯৫ কিংবা সমমানের মাস্ক, দক্ষ জনশক্তিসহ প্রয়োজনীয় কোনো কিছুই নেই এই হাসপাতালে। এনিয়ে এই হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন এক টেলিভিশন সাংবাদিক আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার দাবি, ভর্তি হওয়ার পর গত পাঁচ দিনেও কোনো চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। শুক্রবার পর্যন্ত ওই হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ৩০ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। শনিবার আরো ২৭ জন ভর্তি হওয়ার কথা।
চিকিৎসাধীন ওই সাংবাদিক জানান, করোনা উপসর্গ না থাকা সত্ত্বেও গত ১১ এপ্রিল নরসিংদী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নমুনা দেন দুজন টেলিভিশন সাংবাদিক। এরমধ্যে ১২ এপ্রিল বিকেলে প্রাপ্ত ফলাফলে একজনের করোনা পজেটিভ হয়। ওইদিনই রাত ১১টায় সদর মডেল থানা পুলিশের সহায়তায় অ্যাম্বুলেন্সে করে আনা হয় নরসিংদী করোনা হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে। এরপর জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিভিন্ন ফলফলাদি পাঠিয়ে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন।
এ ছাড়া নিয়ম করে প্রতিদিন রাতে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মিজানুর রহমান শুধুমাত্র ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন। কিন্তু গত পাঁচদিনের মধ্যে একবারের জন্যও কোনো চিকিৎসক দেখতে আসেনি। এ ছাড়া এখানে যদি কারও যদি শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় তাহলে ভেন্টিলেশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। অথবা কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে যে সিসিও কিংবা আইসিওতে রাখবে তারও কোনো ব্যবস্থা নেই।
তিনি আরো জানান, শুক্রবার দুপুরে আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তিকৃতদের পুনরায় পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে আসে স্বাস্থ্যকর্মীরা। তখন আমি যোহরের নামায পড়ছিলাম। নামায শেষ করে নমুনা সংগ্রহকারীদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু তারা আর আসেনি। পরে জানলাম তারা আমার নমুনা সংগ্রহ না করেই চলে গেছে। তাৎক্ষণিক সিভিল সার্জনকে জানালাম তিনিও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই টেলিভিশন সাংবাদিকসহ আইসোলেশনে থাকা ভোক্তভোগী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম বিভিন্ন জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থার খোঁজ নিতে গতকাল বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমাদের জেলা প্রশাসকের ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। সেই রেকর্ড ভাইরালও হয়েছে। সেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন চাহিদা তুলে ধরলেও আমাদের জেলার কর্মকর্তারা কোনো চাহিদাই জানাননি। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকৃত চিত্র তুলে না ধরে শুধু নিজেদের সাফাই করেছেন। আর এখানে আমাদের চিকিৎসা তো দূরের কথা দেখারও যেন কেউ নেই। কেউ অসুস্থ হয়ে মরে পড়ে থাকলেও কেউ জানবে না। নরসিংদীর আইসোলেশন ইউনিটকে শুধুমাত্র কোয়ারেন্টিন ইউনিট বলা যাবে না। অন্য কিছু না।
Leave a Reply