নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে বিতির্কিত এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি)। বৃহস্পতিবার সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান। করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সময়ই এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এর কোনো অপপ্রয়োগ হবে না এ বলে তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্থ করা হয়েছিল ।
বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি ত্রাণের চাল চুরির ঘটনার জেরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী এবং জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ঠাকুরগাঁওয়ের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা। তা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে র্যাব দুদিন আগে ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান, ‘রাষ্ট্রচিন্তা’র সদস্য মো. দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, লেখক মুশতাক আহমেদকে এই আইনে গ্রেপ্তার করে। এর আগে সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে এক সংসদ সদস্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার পর তিনি ৫৪ দিন নিখোঁজ ছিলেন। সম্প্রতি উদ্ধারের পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সিপিবির বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের দায়িত্বহীনতা, সমন্বয়হীনতা, অদূরদর্শিতার কারণে জনগণ এখন চরম হুমকির মধ্যে। ব্যর্থতা আর লুটপাট ঢাকতে সরকার নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। লুটপাটের খবর মিডিয়ায় প্রকাশ করা এবং সামাজিক মাধ্যমে লুটপাটের বিরুদ্ধে লেখা ও সরকারের সমালোচনা করায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেকের বিরুদ্ধে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’ মামলা করা হয়েছে। ব্যর্থতা ঢাকতে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলায় জাতীয় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন হলেও সরকার সেই পথে ‘হাঁটছে না’ বলেও অভিযোগ করেন সিপিবি নেতারা। বিবৃতিতে বলা হয়, সমালোচনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করে, সরকার উল্টো সমালোচনাকারীদের আক্রমণ করায় করোনা-মোকাবেলার কাজটিই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা অবিলম্বে ‘নিবর্তনমূলক’ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দাবি করেছেন।
Leave a Reply