নিজস্ব প্রতিবেদক
সূর্য তেঁতে ওঠায় কয়েকদিন ধরেই তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। জ্যৈষ্ঠের খরতাপ সাধারণ মানুষের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরে বাহিরে সবখানে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষ। দিনের বেলায় কাঠফাঁটা রোদ থেকে বাঁচতে অনেক গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিলেও স্বস্তি মিলছে না সেখানেও।
শ্রমজীবী মানুষ আর গণপরিবহনের যাত্রীদের অবস্থাও সঙ্গীন। ঘামে ভেজা মানুষ খানিকটা স্তস্তির খোঁজলেও মিলছে না সেই স্বস্তি। নগরীতে লোকাল বাসে চলাচলকারী যাত্রীদেরও ভোগান্তির যেন শেষ নেই। যাত্রী নিয়ে ছুটে চলা প্রতিটি গাড়ির ভেতরে উনুনের মত উত্তাপ। ঘেমে একাকার যাত্রীরা।
গতকাল শুক্রবার (২১ মে) ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র গরমে অতিষ্ট ছিল নগরবাসীসহ সারা দেশবাসী। আজও একই অবস্থা থাকতে পারে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গতকাল ঢাকার সারাদিনের আবহাওয়াই ছিল হাপিয়ে ওঠার মতো। ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশ ভুগিয়েছে বাইরে বের হওয়া মানুষদের। আজও একই অবস্থা। সকাল থেকে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে।
অতিরিক্ত গরম উপেক্ষা করে অফিসগামী মানুষ সকালে অফিসে পৌঁছালেও ভাল নেই তারা। শুধু তারাই নয় ভাল নেই দিনমজুর শ্রেণির মানুষ। রিকশা চালক, পরিবহন শ্রমিক, রংমিস্ত্রী, ঢালাই শ্রমিক থেকে শুরু করে ফুটপাতের ব্যবসায়ী এমনকি ভিক্ষুকরাও নাকাল হয়ে পড়েছেন তীব্র গরমে। পথের পাশে একটু ছায়া পেলেই সেখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন মানুষ।
উত্তাপের কারণে ঘরের ভেতরেও থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। ফ্যান থাকলেও গরম বাতাসে গা ভিজে যাচ্ছে। দিনের বেলায় বাইরে থাকা আরও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গরমের কারণে বেশি সময় যাত্রী পরিবহন করতে পারছেন না রিকশাচালকরা। দীর্ঘ সময় বিশ্রাম নিয়ে যাত্রী পরিবহন করতে চাইলেও ভাড়া হাঁকছেন বেশি। রিকশা চালকদের ভাষ্য, গরমের কারণে তাদের মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ঢাকা বিভাগের সব জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রির মধ্যে। ময়মনসিংহ বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি, চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েক জেলায় সর্বোচ্চ ৩৪ ডিগ্রি থাকলেও তাপদাহ সবচেয়ে বেশি ছিল নোয়াখালীর মাইজদীকোর্ট এলাকায়। সেখানে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৮ ডিগ্রি। এছাড়া সিলেটে ৩৫-৩৬, রাজশাহীতে ৩৩ থেকে ৩৬, খুলনায় ৩৭ থেকে ৩৯ ডিগ্রি। বরিশাল ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি। তুলনামূলক তাপদাহ কম ছিল রংপুর বিভাগে। গতকাল এ বিভাগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ থেকে ৩৪ ডিগ্রির মধ্যে।
আজও সারাদেশে এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, দেশের যে সকল এলাকায় গতকাল তাপমাত্রা যেমন ছিল, আজও তেমনই থাকতে পারে। গতকাল তাপমাত্রা তুলনামূলক কম ছিল, এমন জেলাগুলোতে আজ তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে এমন পূর্বাভাসও রয়েছে আবহাওয়া অফিস থেকে।
তাপমাত্রা কমতে পারে ২৪ থেকে ২৫ তারিখের পর। বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট একটু লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে ২৬ তারিখের দিকে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। তার আগে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply