বিশেষ প্রতিবেদন, সিলেট:
ইসলামী শিক্ষা মানবজীবনের জন্য এক অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। কুরআনের হিফজ এবং ইসলামী মূল্যবোধের বিস্তার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে দারুল মাহমুদ তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসা। সিলেটের শাহপরান উপশহর আ/এ-তে অবস্থিত এই মাদ্রাসাটি ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কুরআনের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে। প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এবং শিক্ষার উচ্চ মান বজায় রেখে এটি বর্তমানে সিলেট অঞ্চলের অন্যতম পরিচিত ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।
প্রতিষ্ঠার পটভূমি:
দারুল মাহমুদ মাদ্রাসার যাত্রা শুরু হয়েছিল একটি মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে—সমাজে পবিত্র কুরআনের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া। এর প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মাওলানা আব্দুল আহাদ এবং তার সহযোগীরা ছিলেন কুরআনের প্রতি নিবেদিত প্রাণ। সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে রয়েছেন বিশিষ্ট আলেম হাফিজ মাওলানা ফখর উদ্দিন, তার সঙ্গে রয়েছেন হাফিজ মাওলানা মুখলিছুর রহমান, হাফিজ মাওলানা তোফায়েল আহমদ, এবং হাফিজ মাওলানা মাশহুদ আহমদ। প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটি আজ এক বিশেষ অবস্থানে পৌঁছেছে, আলহামদুলিল্লাহ।
মাদ্রাসার তথ্য এক নজরে:
নাম: দারুল মাহমুদ তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসা
প্রতিষ্ঠাকাল: ২০২২ইং.
অবস্থান: শাহপরান উপশহর আ/এ, খাদিমনগর, সিলেট-৩১০৩
শিক্ষক সংখ্যা: ৮ জন
কর্মচারী সংখ্যা: ১ জন
ছাত্র সংখ্যা: ১০০ জন
বিভাগ: ২টি (হিফজ এবং নুরানি)
শিক্ষাদান পদ্ধতি ও কার্যক্রম:
মাদ্রাসার মূল শিক্ষাক্রম হলো পবিত্র কুরআনের হিফজ। শিক্ষার্থীরা এখানে সঠিক তাজবিদসহ কুরআন মুখস্থ করার পাশাপাশি আকিদা, প্রয়োজনীয় দ্বীন শিক্ষা এবং সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার শিক্ষা গ্রহণ করে। বয়ষ্কদের জন্য রয়েছে বিশেষ শর্ট কোর্স, যা কর্মজীবী ব্যক্তিদের ইসলামী জ্ঞান অর্জনের সুযোগ করে দেয়।
শিক্ষাদানের বৈশিষ্ট্য:
▪পবিত্র কুরআনের গভীর জ্ঞান অর্জনে সহায়তা।
▪নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে গুরুত্ব।
▪আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে ইসলামী শিক্ষার সমন্বয়।
▪পরিচ্ছন্ন ও নিয়মানুবর্তী পরিবেশে শিক্ষাদান।
বিশেষ সুবিধা:
১. কুরআন হিফজ বিভাগ: শিক্ষার্থীদের জন্য পবিত্র কুরআন মুখস্থ করার পদ্ধতিগত ব্যবস্থা।
২. আধুনিক শিক্ষা: ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি গণিত ও ভাষার মতো আধুনিক বিষয় পড়ানোর সুযোগ।
৩. আবাসিক সুবিধা: নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন আবাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা।
৪. দক্ষ শিক্ষক দল: প্রতিটি শিক্ষকই বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
দারুল মাহমুদ মাদ্রাসার মূল লক্ষ্য হলো এমন প্রজন্ম গড়ে তোলা, যারা কুরআনের জ্ঞান এবং ইসলামী মূল্যবোধে পরিপূর্ণ হবে। মাদ্রাসার উদ্দেশ্য শুধু একজন হাফিজ তৈরি করা নয়, বরং একজন নৈতিকতায় পূর্ণ মানুষ তৈরি করা। এটি ইসলামের শান্তির বার্তা সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।
সমাজে অবদান:
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শুধু ইসলামিক শিক্ষায় নিজেকে দক্ষ করে তুলছে না, তারা স্থানীয় মসজিদে ইমামতি, ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান এবং সমাজে নৈতিকতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অনেক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কুরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে এবং সাফল্য অর্জন করছে।
উপসংহার:
দারুল মাহমুদ তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসা একটি আলোকবর্তিকা, যা ইসলামী শিক্ষা ও নৈতিকতার আলোকে প্রজন্মকে আলোকিত করছে। সিলেটের শাহপরান উপশহর থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রা একদিন গোটা বিশ্বে ইসলামের শান্তি ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেবে, এমন আশা করা যায়।
Leave a Reply