কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধি:
কপাল খুললো নওগাঁ আত্রাইয়ের আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রজপুর গ্রামের লবাই প্রামানিক চার মানশিক প্রতিবন্ধীর । লবাই প্রামানিকের দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে দীঘ দশ বছর থেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে দিন কাঁটাতেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঐ পরিবারকে শিকলে বাঁধা থেকে উদ্ধার করে প্রথমে চিকিৎসার চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় পাবনা মানষিক হাসপাতালে এবং প্রতিবন্ধী পরিবারকে দেয়া হয়েছে দুই মাসের খাবার। এখানেই শেষ নয় প্রতিনিয়ত চিকিৎসার খোঁজ –খবর নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও ঐ পতিবন্ধী পরিবারকে একটি ঘর করে দেয়া হবে বলেও আশ্বাস পেয়েছেন পরিবারের অভিবাবক লবাই প্রামানিক।
শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে উপজেলা চত্বরে উপজেলা অফিসাস ক্লাব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আত্রাই অফির্সাস ক্লাবের সভাপতি ও আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আত্রাইয়ের আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের ব্রজপুর গ্রামের লবাই( প্রতিবন্ধী পরিবারের) অবিভাবককে আত্রাই অফির্সাস ক্লাবের নিজস্ব অর্থায়নে একটি গরু তুলে দেন মানবতার ফেরিওয়ালা ইউএনও মোঃ ইকতেখারুল ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এবাদুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ, উপজেলা যুব-উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ ফজলুল হক, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি একেএম কামাল উদ্দিন টগর, আত্রাই আদশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আইনূল হক প্রমূখ।
এর আগে বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট ও স্যোসাল সামাজিক ফেস বুকে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় আত্রাইয়ে একই পরিবারে চারজন মানষিক প্রতিবন্ধ শিকলে বাঁধা মানবতা জীবন যাপন করছে। লবাই প্রামানিক পরিবারের চারজন মানষিক প্রতিবন্ধীরা হলো, মোঃ সাইফুল ইসলাম (৪০), মোঃ আরিফুল ইসলাম (৩৫), নাগিস খাতুন (২৭) ও শিল্পি খাতুন। লবাই প্রামানিক তার চার প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে কৃষিকাজে শ্রম দিতেন। এই ভাবেই তিনি দীঘ ১০-১২ বছর জীবন–যাপন করে আসছেন। তবুও থেমে নেই জীবন। অন্যের বাড়িতে শ্রম দিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। স্ত্রী ও এক ছেলে এবং চারটি ছেলে-মেয়েকে সকলেই মানষিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে ঝুপরি ঘর করে বসবাস করছেন তিনি। সংবাদটি নজরে আসে আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইকতেখারুল ইসলামের। এর পরই তিনি ছুটে যান ঐ মানষিক পরিবারের বাড়িতে গিয়ে ঐ পরিবারকে দুই মাসের খাদ্য সামগ্রী প্রদান করে ও তাৎক্ষনিক তাদের চিকিৎসার জন্য ইউএনও ব্যক্তিগত অর্থায়ন দিয়ে পাবনা মানষিক হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম জানান, গণ মাধ্যমও স্যোসাল সামাজিক মাধ্যমে সংবাদটি আমার নজরে আসার পরপরই আমি তার ঠিকানা সংগ্রহ করি। একই পরিবারের চার জন মানষিক প্রতিবন্ধীর বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেই এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসার জন্য পাবনা মানষিক হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করি।
তিনি আরো বলেন, লবাই প্রামানিকের বাড়ি উপজেলার আহসানগঞ্জ ইউপির ব্রজপুর গ্রামে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাকে একটি প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার দেয়ার জন্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
প্রতিবন্ধী পরিবারের অবিভাবক লবাই প্রামানিক বলেন, আমার চার ছেলে-মেয়ে মানষিক প্রতিবন্ধী দীঘ দশ-বারো বছর থেকে তাদের নিয়ে বড়ই কষ্টে জীবন-যাপন করছি অন্যের বাড়িতে শ্রমদিয়ে। অভাব–অনাটনে দিন কাটে। অর্থের অভাবে আমার চার ছেলে –মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারি নাই। এই দুঃসময়ে তাকেসহযোগীতা করার জন্য ইউএনও’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জীবনযুদ্ধে হার না মানা এই যোদ্ধা।
Leave a Reply