নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীতে অত্যন্ত ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় নরসিংদী শহরের মধ্যকান্দা পাড়াস্থ গোপীনাথ জিউর আখড়াধামে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা অর্চণার কথা বলা হলেও, এসময় মানা হয়নি কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি।
এবছর নরসিংদীর কুমারী পূজায় পূজনিয় হন নারায়নগঞ্জের কালীবাজার এলাকার মনোঞ্জন চক্রবর্তীর কন্যা কুমারী শ্রী জিতা চক্রবর্তী।
হিন্দু শাস্ত্র মতে. কুমারী পূজার উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধ করার মধ্য দিয়ে থেকে। গল্পে বর্ণিত রয়েছে, কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। সে সকল দেবগণের আবেদনে সাড়া দিযে় দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। কুমারীরা শুদ্ধতার প্রতীক হওয়ায় মাতৃরূপে ঈশ্বরের আরাধনার জন্য কুমারী কন্যাকে নির্বাচন করা হয়। সাধারণত অষ্টমী বা নবমীতে কুমারী পূজা করা হয়। সনাতন ধর্মে নারীকে সন্মানের শ্রেষ্ঠ আসনে বসানো হয়েছে। “নিজেদের পশুত্বকে সংযত রেখে নারীকে সন্মান জানাতে হবে”- এটাই কুমারী পূজার মূল লক্ষ্য।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির শারদীয় দূর্গোৎসব পালনে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে ২৬ টি নির্দেশনা মেনে সারাদেশে দূর্গাপূজা করছে সনাতন ধর্মালম্বীরা। দূর্গাপূজার একটি অংশ কুমারী পূজা। দেশে বিভিন্ন মিশনগুলোতে শারদীয় দূর্গোৎসবের অষ্টমী পূজা শেষে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এ বছর কুমারী পূজা পালন থেকে সারাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিরত থাকলেও নরসিংদীর গোপীনাথ জিউর আখড়াধাম তা পালন করে।। অন্যান্য বছর নরসিংদীতে কুমারী পূজার আয়োজনকারী অগ্রণী সংঘ কুমারী পূজা পালন থেকে বিরত থাকলে কোন রকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া নরসিংদীর গোপীনাথ জিউর আখড়াধাম তা পালন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মুষ্ঠিমেয় ভক্তের বাহবা কুড়ালেও পূজা পালনকালীন সময়ে মানা হয়নি কোন রকমের স্বাস্থ্যবিধি। পূজা উদযাপন কমিটি স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি আমলে না এনে কুমারী পূজার আয়োজন করায় সমালোচনার মুখে পড়েন।
সমীর দেবনাথ নামে এক সরকারী কর্মকর্তা বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে পূজা দেখতে বের হয়েছি। ঘুরতে ঘুরতে এখানে এসে দেখলাম কুমারী পূজা হচ্ছে। এখানকার পরিবেশ আমাকে অনেকটাই ভাবিয়ে তোলেছে। এভাবে গাদাগাদি করে মানুষ পূজা দেখছেন আরতি নিচ্ছেন, অধিকাংশ দর্শনার্থীর মুখে মাস্ক নেই।
এসময় নরসিংদী গোপীনাথ জিউর আখড়াধাম পূজা উদযাপন কমিটির কোষাধ্যক্ষ সুব্রত কুমার সাহা (কালি) কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি উল্টো সংবাদকর্মীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
Leave a Reply