মনিরুজ্জামান,মাধবদী
নরসিংদী মাধবদীতে সমিতির সঞ্চয়ের টাকা চাইতে যাওয়ায় রুনা বেগম (২৫) নামে এক নারী গ্রাহককে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের ডৌকাদী ক্লাবঘর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার (১৭ এপ্রিল) ঘটনার বিচার চেয়ে সমিতির লোকজনদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান ভুক্তাভোগীর স্বামী আলমগীর(৩০)। তবে এব্যাপারে রবিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে মাধবদী থানায় যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান জানান,কাঠালিয়া ইউনিয়নের ডৌকাদী গ্রামের ঘটনাটি তিনি অবগত নন। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে এর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরেজমিনে ভুক্তাভোগীর পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাঠাঁলিয়া ইউনিয়নের ডৌকাদী ক্লাবঘর এলাকায় “জনসেবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামে স্থানীয় একটি সমিতি অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রাহক যোগাড় করে। এতে প্রলোভন দেখানো হয় এক কালীন ৬ হাজার টাকা জমা দিলে পাঁচ বছর পর সুদে-আসলে ২৩ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এতে ব্যাপক লোক সাড়া দিয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা সঞ্চিত রাখে। সবার সাথে একই গ্রামের আলমগীর ও তার স্ত্রী রুনা বেগমও যোগ হয়। সম্প্রতি রুনা বেগমসহ অনেকের টাকা জমা রাখার পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় তারা সঞ্চয় ভাঙতে চায়। কিন্তু সমিতির লোকজন এতে তালবাহানা শুরু করে। দফায় দফায় তাদেরকে সময় দেয়া হয়। একপর্যায়ে গত শুক্রবার সকালে টাকার জন্য রুনা বেগম তার স্বামী আলমগীর, ভাসুর দেলোয়ারসহ কয়েকজন সদস্য সমিতির পরিচালক একই গ্রামের মৃত শবদর আলীর ছেলে ওবায়দুল্লাহদের বাড়িতে যায়। এসময় উভয় পক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডা হলে সমিতির পরিচালকরা জড়ো হয়ে তাদের উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করে। এতে রুনা বেগম (২৫) এর মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়। এর আগে রুনার স্বামী আলমগীর ও ভাসুর দেলোয়ারকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
আহত রুনা বেগম জানান, তার ভাসুর দেলোয়ার ও স্বামী আলমগীর সহ সমিতির টাকা আনতে গেলে সমিতির পরিচালক ওবায়দুল্লাহ (৫২), মিজান মিয়া(৪৫), ওসমান মিয়া(৩৭)সহ একই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে ফারুক মিয়া(৩০), হাবিউল্লার ছেলে আবু সাইদ(২৫),হুমায়ুন এর ছেলে রাছেল (২৫),আব্বাস মিয়া(৩৫) সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে রুনা বেগম গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। রুনার মাথায় ১০টি সেলাই দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আহত দেলোয়ার জানান, সমিতির লোকজন গ্রাহকদের অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে লাখলাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রাহকরা এসব টাকা চাইতে গেলেই তারা মারধর করে। তিনি অবিলম্বে গ্রাহকদের প্রত্যাশিত মুনাফাসহ আসল টাকা ফেরত ও মারধরের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, সমিতির লোকজনদের এব্যাপারে নিয়ে বসা হয়েছে। সমিতির লোকজন প্রতি গ্রাহককে ১২ হাজার টাকা করে ফেরত দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে কিন্তু গ্রাহকরা এটা মানছেন না। এছাড়া এক নারী গ্রাহককে জখম করায় ভুক্তভোগীরা থানা পুলিশের আশ্রয় নিয়েছেন বলে ও জানান তিনি।
Leave a Reply