নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদী শহরের আবাসিক হোটেলে নিয়ে এসে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের চেষ্টায় ওই ছাত্রের ছুরিকাঘাতের শিকার হন এনামুল হক (৪৭) নামে এক ব্যক্তি। বলাৎকারের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদী মডেল থানায় ওই মাদ্রাসা ছাত্র বাদী হয়ে অভিযুক্ত এনামুল হককে আসামী করে এটি মামলা দায়ের করেন।
সোমবার দিবাগত রাতে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন আবাসিক সায়মা হোটেলের একটি কক্ষে বলৎকারের চেষ্টায় এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। রাত ১১টার দিকে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ ওই আবাসিক হোটেল থেকে দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে মামলা হওয়ার পরে এনামুল হককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
১৬ বছর বয়সী ওই মাদ্রাসা ছাত্রের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে। সে গাজীপুরের টঙ্গীর মাদ্রাসায়ে নববী নামের একটি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। একটি মোবইল ফোন কেনার জন্য সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে নরসিংদী এসেছিল। অন্যদিকে অভিযুক্ত এনামুল হক ময়মনসিংহের গৌরিপুর উপজেলার ষোলগাই গ্রামের আবুল হাসানের ছেলে। একটি অস্ত্র মামলায় নরসিংদী জেলা কারাগারে থাকা ছেলের জামিন করাতে চার-পাঁচ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে এনামুল হক নরসিংদী এসেছিলেন।
জানা যায়, গাজীপুরের টঙ্গীর একটি মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে সোমবার ওই মাদ্রাসা ছাত্র একটি মোবাইল ফোন কেনার জন্য নরসিংদীতে আসেন। ওইদিন সন্ধ্যায়ই নরসিংদী রেলস্টেশনের একটি চায়ের দোকানে বাড়িতে ফোন করার জন্য এনামুল হক নামের এক ব্যক্তির কাছে মোবাইল ফোন চেয়ে সাহায্য চান ওই ছাত্র। এর সূত্র ধরেই দু’জনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে রাতটা পার করার জন্য এনামুলের কাছে আশ্রয় চায় সে। এর পরেই তাকে সঙ্গে নিয়ে এই হোটেলে আসেন এনামুল হক।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় এনামুল হক নামের ওই ব্যক্তি এক কিশোর মাদ্রাসা ছাত্রকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এই হোটেলে আসেন। এখানে চার-পাঁচদিন থাকবেন বলে তিনি ওই সময় তাদেরকে জানান। তবে সঙ্গে থাকা ওই মাদ্রাসা ছাত্র কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে চলে যাবে বলে তাদেরকে জানানো হয়। পরে তাকে হোটেলটির দুতলার এক নাম্বার কক্ষটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। রাত ৮টার দিকে ওই কিশোরের চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনে অন্যান্য কক্ষের লোকজন সেখানে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায় এনামুল হকের পা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে আর ছুরি হাতে এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে ওই মাদ্রাসা ছাত্র। ওই সময় মাদ্রাসা ছাত্রটি জানায়, তাকে বলাৎকারের চেষ্টা করায় এনামুল হককে ছুরিকাঘাত করেছে সে।
পাশের কামরায় থাকা মো. হাসান নামের একজন জানান, ‘কক্ষে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরই ওই মাদ্রাসা ছাত্রকে বলাৎকারের চেষ্টা করতে থাকেন এনামুল হক। কৌশলে এসব দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রাখে ওই মাদ্রাসা ছাত্র। পরে এনামুলকে ব্যাপক মারধর করে সঙ্গে থাকা একটি ছুরি দিয়ে তার পায়ের উরুতে আঘাত করেন সে। এর পরেই দুজনের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আমরা তার কক্ষের সামনে যাই। আমাদের সামনেই সে নিজের হাতেও ওই ছুরি দিয়েই আঘাত করে। পরে ওই মাদ্রাসা ছাত্র ৯৯৯ এ ফোন করেন। কিন্তু সংযোগ না পেয়ে নিজেই পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের দুজনকেই থানায় নিয়ে যায়।
Leave a Reply