আবুল কাশেম, নরসিংদী:
নরসিংদীর মেঘনা নদী এখন কচুরিপানার দখলে। দেখলেই মনে হয় এ যেন কচুরিপানার অভয়ারণ্য। পুরো নদী কচুরিপানার দখলে থাকায় নৌ চলাচলে বিঘ্নসহ বিভিন্ন রকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে, এতে দূর্ভোগসহ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চরাঞ্চলবাসী।
সরেজমিনে নরসিংদীর মেঘনা নদীতে গিয়ে দেখা যায়, নরসিংদী থানাঘাট হতে করিমপুর পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার নদীপথ দখল করে নিয়েছে ভাসমান কচুরিপানা্।এতে নরসিংদীর সাথে চরাঞ্চলের নৌ যোগাযোগ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। ফলে গত বেশ কয়েকদিন যাবৎ ভোগান্তিতে পড়েছে চরাঞ্চলবাসি।
ভুক্তভোগি চরাঞ্চলবাসী জানায়, চরবাসিদের নিত্য পন্য,ঔষধ,কাচাঁ মালের সিংহভাগই আসে নরসিংদী থেকে। নৌকা যোগে এসব আনতে মারাত্নক দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে তারা। নদী জুড়ে ভাসমান কচুরিপানা থাকায় লঞ্চ, স্টিমার, ইঞ্চিন চালিত নৌকা চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।ইতোমধ্যে নরসিংদী থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারি কয়েকশ’ স্পিডবোর্ট বন্ধ হয়ে গেছে।এ অবস্হায় লোকজন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাদের গন্তব্যে পৌছাতে পারছেনা।আগে যেসব স্থানে যেতে সময় লাগত এক ঘন্টা এখন সেখানে যেতে সময় লাগছে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা।
জানা যায়, ভাসমান এসব কচুরিপানার উৎস হচ্ছে এক শ্রেণীর প্রতাপশালী ব্যক্তিদের অবৈধ মাছের ঘের।আর ওইসব ঘেরের কচুরিপানা বাতাসে এসে জমা হয় নরসিংদী নদীবন্দরে। প্রতি বছরই এ সময়ে নরসিংদীর মেঘনা নদী দখল করে নেয় ভাসমান এই কচুরিপানা। যার ফলে প্রতিবছরই এমন দুর্ভোগে পড়তে হয় চরাঞ্চলসহ নৌপথে যাতায়তকারিদের।
ইঞ্জিন চালিত নৌকার মাঝি রমজান এ প্রতিবেদককে জানায়, কচুরিপানার কারনে ঠিকভাবে নৌকা চালাতে পারেনা তারা । একটু পরপরই ভাসমান কচুরিপানার স্তুপে আটকে যায় নৌকা। এসময় লগি বৈঠা দিয়ে আটকে যাওয়া নৌকাকে মুক্ত করতে হয়। তাছাড়া যে গতিতে নৌকা চালায় তারা কচুরিপানার কারণে সেই স্বাভাবিক গতিতে চলাতে পারে না তারা।এতে গন্তব্যে পৌছতে নিদ্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দুই তিন গুণ বেশী সময় লেগে যায়। ফলে তাদেরকে অতিরিক্ত তেল পুড়তে হয়।
স্পিডবোর্ট চালক রুবেল বলেন, নদীতে কচুরিপানা এতো বেড়েছে যার কারণে তাদেরকে বোর্ট চালানোই বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এতে তারা কর্মহীন হয়ে কষ্টকর জীবন যাপন করছে।
এ ব্যাপারে চরাঞ্চলের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কচুরিপানার ছবি ও ভিডিও, পোস্ট করে বারবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে। তাদের এ প্রচেষ্টা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে কিনা তা তারা জানেনা।আর দৃষ্টি গোচর হলেও কেন চরাঞ্চলবাসীর এ দূর্ভোগ লাগবে এখনও এগিয়ে আসছেন না তা তাদের বোধগম্য নয়।এ ব্যপারে ভোক্তভোগী নৌযান মালিক, চরাঞ্চলবাসি প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Leave a Reply