1. mostafa0192@gmail.com : admin2024 :
বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

নানান নাটকীয়তা শেষে মারিয়া হত্যার মূলহোতা আমান এখন জেলহাজতে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ মে, ২০২২
  • ৩৮৭ বার পঠিত

আরিফুর রহমান স্বপন, জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা:

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে গৃহবধূ মারিয়া হত্যার মূলহোতা যৌতুক লোভী মারিয়ার পাষন্ড স্বামী আমান উল্লাহ’র জামিন নামঞ্জুর করে কুমিল্লার বিজ্ঞ আদালত ১১ মে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।

মামলার প্রধান আসামি আমান উল্লাহ মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের বচইড় গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। মারিয়ার মা ও বাবার অভিযোগ মারিয়ার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং দেবর, ননদ মিলে গত বছরের ১০ আগষ্ট যৌতুকের জন্য তাদের একমাত্র মেয়ে মারিয়াকে শারীরিক নির্যাতন করে এবং বিষাক্ত পোকার ঔষধ খাইয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনার পরদিন বুধবার (১১ আগষ্ট) পুলিশ মারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। ওইদিন নিহত মারিয়ার বাবা লাকসাম উপজেলার বেতিহাটি গ্রামের মোর্শেদ আলম বাদী হয়ে মনোহরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই সময় মনোহগঞ্জ থানার ওসি সরাসরি হত্যা মামলা না নিয়ে অজ্ঞাত কারণে মামলাটিকে ভিন্নভাবে দায়ের করতে বাদীকে প্ররোচিত করারও অভিযোগ করেন মারিয়ার পরিবার।

একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এবং তাদের মদদে আসামি গ্রেফতারে বিভিন্ন নাটকীয়তা শেষে দীর্ঘদিন পর আসামিরা বিজ্ঞ উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বীরদর্পে এলাকায় বসবাস করেন।

অবশেষে আজ ১১ মে কুমিল্লার বিজ্ঞ আদালত মামলার প্রধান আসামি আমান উল্লাহ’র জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন এবং মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই’কে নির্দেশ দেন।

এদিকে নিহত মারিয়ার বাবার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বেতিহাটি গ্রামের মোর্শেদ আলমের একমাত্র মেয়ে মারিয়া আক্তারের সঙ্গে পাশবর্তী মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের বচইড় গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আমান উল্লাহ’র বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি দেবর-ননদসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রায় সময় মারিয়ার পরিবারের কাছে বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ব্যবসার জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছে। এতে মারিয়ার পরিবার সকল দাবি পূরণ করতে না পারায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে মারিয়াকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম নির্যাতন করতো। ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) ওই নির্যাতনের বলি হয়েছে মারিয়া।

নিহত মারিয়ার মা ফাহিমা আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার মেয়েকে নানা অজুহাতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম নির্যাতন করতো।

তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার দিকে মারিয়ার স্বামী আমান উল্লাহ জানায়, মারিয়া খুব অসুস্থ। কি যেন হয়েছে। তাকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে এনেছি। এর কিছুক্ষণ পর মারিয়ার অবস্থা জানতে চাইলে সে (স্বামী) জানায় তাকে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছি। একপর্যায়ে রাত অনুমান পৌনে দুইটার দিকে জানতে পারি আমার মেয়ে মারা গেছে। নিহত মারিয়ার এক বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

মারিয়ার মা জানান, বিভিন্ন সময়ে তার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। এ নিয়ে গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন শামীমসহ গণ্যমান্য বক্তিবর্গের মধ্যস্থতার একাধিকবার সালিশ-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (৫ আগষ্ট) আমার মেয়েকে তার স্বামী আমান উল্লাহ আমাদের বাড়ি থেকে তার বাড়িতে (বচইড়) নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়।

এ বিষয়ে তিনি আবারও ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন শামীমকে অবহিত করেছেন। নিহত মারিয়ার বাবা-মায়ের দাবি, মারিয়ার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে মারিয়াকে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যার সুষ্ঠ বিচার চাই।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Jonaki Media and Communication Limited
Design By Khan IT Host