নাসিম আজাদ, পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি:
একসময় হাতেগোনা কিছু বাড়িতে একটি–দুটি লিচুগাছ থাকলেও বর্তমানে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেশকিছু এলাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে লিচু বাগানের সংখ্যা। এর মধ্যে উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের রাবান, টেঙ্গরপাড়া, চর্ণগরদী আর গজারিয়া ইউনিয়নের সরকারচর, ইছাখালী ও খাসহাওলাসহ চরসিন্দুর ইউনিয়নের কিছু এলাকা। মাটির গুনগত মান খুবই ভালো। দোআঁশ ও এটেল, যা লিচু চাষের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। বিগত বছরগুলোতে লিচু চাষিরা তাদের বাগান থেকে লিচু বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্যন করায় লিচু চাষের দিকে ঝুঁকছে এখানকার চাষিরা। মাঘের শেষ ও ফাল্গুনের শুরুতে আসতে শুরু করেছে মুকুল। তবে এবার মৌসুমের শুরুতে শীতের প্রকোপ কম থাকায় এখানকার লিচুবাগান গুলোতে মুকুল এসেছে দেরীতে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এবছর উপজেলার ১৫ হেক্টর জমির লিচু বাগানে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। লিচু চাষিরা এখন লিচু বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত মৌসুমের মতোই লিচুতে লাভবান হবেন কৃষকেরা। এবার লিচুর হার্ভেস্টিং সময় আর ঈদুল ফিতর কাছাকাছি সময়ে পরবে। সবকিছু ঠিক থাকলে রমজান মাসের শেষ ভাগে ইফতারিতে দেখা মিলবে টসটসে রসালো লিচুর, এমনটাই জানিয়েছেন চাষিরা।
রাবানের লিচু চাষি শুভাশ চন্দ্র ধর জানান, আমার বাগানের প্রতিটি লিচুগাছে মুকুল আসার পর এখন ফুল ফুটাও শেষ পর্যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হবে।
সরকারচর গ্রামের লিচু চাষি জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার বাগানের সবগুলো গাছে ফুলফুটা শেষে প্রতিটি লচকায় গুটি হচ্ছে। গত বছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এ অঞ্চল থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি হয়েছে।
অন্যদিকে ইছাখালী গ্রামের মফিজুল ইসলাম জানান, আমার ৩টি লিচু বাগান রয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা এখন বাগান কেনার জন্য আসছেন। গুটি শুরু হওয়ার সাথে সাথেই বাগান কিনে নেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবু নাদির এস এ সিদ্দিকীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মুকুল থেকে গুটি হতে শুরু করলে হপার পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে একবার বিষ প্রয়োগ করতেই হয়। ছত্রাক থেকে বাগানকে রক্ষা করতে কীটনাশক স্প্রে করতে চাষিদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক, জৈব সার ও সেচ প্রদান করা হচ্ছে। মুকুল দেরিতে এলেও ফলন সন্তোষজনক হবে বলে আশা করছি।
Leave a Reply