নাসিম আজাদ,পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ
আওয়ামী লীগের দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বৎসর অন্তর অন্তর সন্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হওয়ার কথা থাকলেও নরসিংদীর পলাশে দীর্ঘ সাড়ে সাত বৎসর পর সোমবার ১৬ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহু কাঙ্ক্ষিত সন্মেলন।
আর এই সন্মেলনকে ঘিরে যেমনি ভাবে উপজেলার সর্বত্র কর্মীসমর্থকদের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ তেমনি অনুপ্রবেশ কারীদের ঠেকাতেও রয়েছে কঠোর অবস্থান। এরইমধ্যে উপজেলার সর্বত্র ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ নির্মাণ ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে। বিশাল আকৃতির মঞ্চ নির্মানের কাজও শেষ পর্যায়।
ঢাকা জেলার কালিগন্জ থানার আওতাধীন থাকলেও ১৯৭৭ সালে পলাশ থানার জন্ম হয়েছে বলে জানা যায়। সেই প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে আমৃত্যু সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল হক হাসান।
বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন, সাংসদ আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ। তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৯৯৬ সালে প্রথম পলাশ থানা কমিটিতে আসীন হোন। এখনো পর্যন্ত সভাপতি পদে বিকল্প প্রার্থী না থাকায় তিনিই হতে যাচ্ছেন টানা তৃতীয় বারের মতো পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদটির জন্য বর্তমানে দায়িত্বে থাকা ওবায়দুল কবির মৃধা সহ প্রার্থী রয়েছেন তিনজন। এরমধ্যে সাধারণ সম্পাদকের এ পদটি পেতে আগ্রহী উপজেলার জিনারদী ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি কামরুল ইসলাম গাজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করতে রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলে এরই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাবো।
সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, প্রতিটি ইউনিয়নকে শক্তিশালী করে নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ।
সাধারণ সম্পাদক পদে অপর প্রার্থী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কারীউল্লাহ সরকার জানান, ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগ, দীর্ঘ বৎসর যাবৎ রাজনীতির সাথে জড়িত। তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি।কমিটিতে অনুপ্রবেশ কারীরা যেন স্থান না পায় সে ব্যাপারে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। এবিষয়ে ৯০ ভাগ নেতা-কর্মীও মুখ খুলতে শুরু করেছে। তৃণমূল থেকে উঠে আসা কর্মীরা নেতৃত্ব দিবে এমনটাই প্রত্যাশা।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সন্মেলনে প্রথম বারের মতো সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব আাসা ওবায়দুল কবির মৃধা জানান, আমি ১৯৮১ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করি। পদে আছি এবং দ্বিতীয় বারের মতো থাকতে চাই। অনুপ্রবেশ কারীরা যেন আমাদের সংগঠনকে কলংকিত করতে না পারে। যারা নাকি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা যাতে প্রতিষ্ঠিত না হয়, সেই জন্য কাজ করছে। স্বৈরাচারের পক্ষে দলের হয়ে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে কাজ করছে। যারা আওয়ামী লীগের সুদিনে দলে এসেছে, তারা আজ প্রার্থী হচ্ছে। সেটা শুনে আমি মর্মাহত ও বিচলিত। এমনটি হলে পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগ ভেঙে যাবে। আমাকে পদ থেকে সড়িয়ে দেওয়ার জন্য চলছে গভীর ষড়যন্ত্র। উপজেলার প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ নেতা-কর্মী আমার পাশে রয়েছে। আশা করি নেতৃবৃন্দ তাদের মনের ভাষা বুঝবে।
পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ষিয়ান নেতা মনোয়ারুল ইসলাম নাসিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বর্তমান ও সাবেক সাংসদের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে তারা অবশ্যই ভালো দিকটি দেখবেন। চাওয়া পাওয়ার কোন কিছুই নেই। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাথেই থাকবো।তবে চাই প্রিয় সংগঠনটি ভালো চলুক।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনু জানান, বর্তমানে যারা নেতৃত্বে আছে, তাদের প্রতি আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। সন্মেলনের সফলতা কামনা করে শুধু এতোটুকুই বলতে চাই, সুবিধা ভোগীরা যেন নেতৃত্বে আসতে না পারে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কৃষি মন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক সন্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
Leave a Reply