শুক্রবার সকাল ১০:৩০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মুখে পরিবেশবাদী সামাজিক সংগঠন “সবুজ আন্দোলনের” উদ্যোগে “পৃথিবীর সকল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের দাবীতে” সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি সবুজ আন্দোলন পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, “কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা উৎপাদনের জন্য প্রথমে পাউডারে বিচূর্ণ করা হয় চক্রের কনভেয়র যা পরবর্তীতে বয়লারে যাওয়ার আগে পালভারাইজড হয়। পিসিসি (PCC= Pulverized Coal Combustion) সিস্টেমের কম্বাশন চেম্বার হয়ে বয়লারে উচ্চতাপে পুড়ানো হয়। এইখানে চিনমি (Stack) হয়ে কয়লা পুড়া ধূয়া বের হবে আর ভস্মীভূত ছাই নিজ দিয়ে নির্গত হয়। অন্যদিকে পানি থেকে রূপান্তরিত বাষ্প টার্বাইনে উচ্চচাপে প্রবেশ করে যেখানে হাজার প্রোপেলারকে সে হাইস্পীডে ঘুরাতে থাকে যা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এই বাষ্প টার্বাইন থেকে আবার কনডেনসারে কন্ডেন্সড হয়ে পুনরায় বয়লারে যায় আরেকবার ব্যবহৃত হতে। এই সহজ চক্রে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো তার উৎপাদন চক্র শেষ করে। এইখানে পরিবেশ দূষণের উপাদান নির্গত হয় চিমনি দিয়ে, নির্গত পানির সাথে এবং ভস্মীভূত ছাই হিসেবে। যা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এইখানে উল্লখ্য পানি বিশুদ্ধিকরণের জন্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানো হলেও আমাদের জানামতে দুনিয়াজুড়ে চিমনী দিয়ে নির্গত বিষাক্ত ধুঁয়ার কোন প্রকার ট্রিটমেন্ট করা হয় না।”
তিনি বলেন, “উন্নত দেশগুলো কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে আসছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহার করছে। ২০১৮ সালে সারাবিশ্বের মোট কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সিংহভাগ চীন ও ভারতে নির্মিত হয়েছে। যদি বর্তমানে চীন ও ভারত বর্তমানে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ যথেষ্ট কমিয়ে দিয়েছে। সরকার চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চাচ্ছে। যা দেশে পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনবে। আমরা সরকারকে নতুন করে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি। ডোনাল্ড ট্রাম্প যাতে প্যারিস চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য হয় সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ প্রয়োগ করতে আমরা বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানাই। তাই আমরা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো ২০৩০ সালের মধ্যে অর্ধেক ও ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সকল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা হোক। জলবায়ু সংকটের কারণে বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রসমূহকে দায়ী রাষ্ট্রগুলোর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।”
সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ-সভাপতি ড. রুহুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখনে সংগঠনের আন্তর্জাতিক পরিচালক মোঃ মোবারক হোসেন, ড. মোয়াজ্জেম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক ফজলু, নারী ও শিশু সম্পাদক রিমা সরদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক তৌহিদ হোসেন মোল্লা, উত্তরের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক লোকমান হায়দার চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হান্নান মিল্টন, সদস্য সচিব নজিবুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি এ্যাড. আবু বকর ছিদ্দিকের দাদা মারা যাওয়ায়, মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
Leave a Reply