নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না- এমন নির্দেশনাসহ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন। সরকার ঘোষিত এই লকডাউন বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোর থেকে শুরু হয়েছে, চলবে ৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার কঠোর নির্দেশনা থাকলেও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বের হচ্ছেন মানুষ। সড়কগুলোতে অবাধে চলাচল করছে প্রাইভেটকার, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকসহ মোটরবাইক। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কল্যাণপুর, শ্যামলী, শিশুমেলা, গাবতলী বেড়িবাঁধ ও রায়েরবাজার এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মামলা হয়েছে কমপক্ষে ৫০ জনের নামে। রাজধানীর রমনা, মিরপুর, শাহবাগ, গাবতলীসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করা হয়েছে তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর শ্যামলীতে কোনো পুলিশ চেকপোস্ট না থাকায় অবাধে চলছে নিজস্ব পরিবহন ও মোটরবাইক। কমেনি লোকসমাগম। অধিকাংশ ব্যবসায়ী দোকানের সাটার অর্ধেক নামিয়ে ব্যবসা করছেন। চলছে মানুষের আড্ডা। গাবতলী বেড়িবাঁধে দেখা গেছে অবাধে চলছে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। চার থেকে পাঁচজন যাত্রী একসাথে পরিবহন করা হচ্ছে এগুলোতে। সুযোগ বুঝে নেয়া হচ্ছে অধিক ভাড়া।
এসব এলাকার পার্কগুলোতে মানুষের আড্ডা দেখা গেছে। সড়কে অনেক মোটরসাইকেল আরোহীকে যাত্রী পরিবহন করতেও দেখা গেছে। পুলিশের জেরার মুখে পড়ার ভয়ে মোটরসাইকেল চালকরাও বিভিন্ন অলি-গলি ব্যবহার করছেন। তবে মহাসড়কগুলোতে গাড়ির চাপ নাই বললেই চলে।
এদিকে বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছেন লোকজন। কেউ বলছেন বাজার করতে যাচ্ছেন, কেউ বা বলছেন ওষুধ কিনতে আসছেন।
মিরপুর এলাকায় পথচারী শাহেদকে কঠোর লকডাউনে বাইরে বের হবার কারণ জানতে চাইলে বাজার করতে বের হয়েছেন বলে জানান তিনি।
রমনা বিভাগের পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন অর রশীদ জানান, বিধি-নিষেথ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ অমান্য করায় দণ্ডবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শাহবাগে বারডেমের সামনে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, সকাল থেকে তল্লাশি করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত যাদেরকে পেয়েছি অধিকাংশই প্রয়োজনে বের হয়েছেন। কেউ চিকিৎসার জন্য বের হয়েছেন, কেউবা বিদেশ যাবেন।
মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার মাহিন বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ১০ জনকে অপ্রয়োজনীয় চলাফেরার অভিযোগে আটক করেছি। এর মধ্যে রায়েরবাজার থেকে ৭ জন এবং তিন রাস্তার মোড় থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। বিধি নিষেধ না মানায় মিরপুরে লকডাউন না মানায় ১০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সারা দেশে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে বিধি-নিষেধ মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা যাচাই করতে পুলিশের মত র্যাবও বিভিন্ন মোড়ে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে। টহলে রয়েছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
লকডাউনের প্রথমদিনে রাস্তাঘাট তেমন ফাঁকা ছিল না তবে তুলনামূলকভাবে গাড়ির সংখ্যা কম ছিল। রাস্তায় কিছু মানুষকেও বের হতে দেখা গেছে। ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ ছিল রাস্তায়।
করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে কঠোর লকডাউন দিয়েছে সরকার। করোনা ভাইরাসে বুধবার দেশে মারা গেছেন ১১৫ জন। রেকর্ড শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮২২ জন।
Leave a Reply