নিজস্ব প্রতিবেদক
ভেঙে পরেছে মনোহরদী উপজেলার তারাকান্দি টি কিউ এ এইচ বালিকা দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা। ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত নাজু্ক। এ বছর দাখিল পরীক্ষায় ৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে ৩ জনই অকৃতকার্য হয়। পাশ করেছে ২ জন।
অত্র মাদরাসায় শিক্ষক-কর্মচারী ২০ জন, এবছর দাখিল পরিক্ষায় অংশ নেয় ৫ জন, ফেল ৩ জন।যার মধ্যে ২ জন পুরানো পরিক্ষার্থী ও রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে এলাকাবাসীর কাছে হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে!
এমপিওভুক্ত এ মাদরাসাটিতে ১৬ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারী রয়েছেন। অতীত ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯ সালে দাখিল পরীক্ষায় ৯ জনের মধ্যে ২ জন ও ২০১৮ সালে ১০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ জন অকৃতকার্য হয়। প্রতিবছরের ফলাফলেই এরূপ দৃশ্যপট পরিলক্ষিত হয়।
একদিকে যেমন এলাকাবাসী মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে,অপরদিকে প্রতিমাসে প্রায় ২০ টি পদের বিপরীতে সরকারের ব্যয়িত দেড় লক্ষাধিক টাকা অর্থহীন হয়ে যাচ্ছে। কারণ বিশ্লেষণে দেখা যায়, নগন্য সংখ্যক শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হয়, কর্তৃপক্ষের নুন্যতম তদারকি ও শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার অভাব। দাখিল পরীক্ষায় যেসব মাদরাসা থেকে ১০ জনের কম শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, পাসের হার ৫০ ভাগের নিচে (২০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়া), নয় জনের কম শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে এই ধরনের ৫০৪টি মাদরাসাকে গত ১২ই জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে শোকজ করা হয়।
এ প্রতিষ্ঠানটিকেও একই নোটিশ দেয়া হয়৷ পরবর্তীতে শোকজসহ এমপিও স্থগিত করা হয়। এরপর বিশেষ শর্তে এমপিও চালু করা হলেও কোনবারই শর্ত পূরণ করতে পারেনি এ প্রতিষ্ঠান। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিবছরই ১০ জনেরও কম শিক্ষার্থী ভর্তি ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের দায়সারা ভাব।
অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানায়, অধিকাংশ সময় খোলার দিনেও মাদরাসা থাকে জনশূন্য ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস থাকে ফাঁকা। প্রতিদিনই বেশ কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা দেখা যায়। অভিভাবকদের অভিযোগ, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ শ্রেণিকক্ষ,ভবন সংকটসহ নানা অযুহাতে তাদের পাঠদান করতে অনীহা প্রকাশ করে এবং তাদর মেয়েদেরকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে।
শিক্ষার্থী ফেল করার বিষয়ে মাদরাসার সুপার মাওলানা এমারত হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এটা সাংবাদিকের জানার কোন প্রয়োজন নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে তাহলে আমাকে তার নাম বলুন, আর আমি এই ব্যাপারে কোন কথা বলব না। আপনারা ভালো ভালো নিউজ রেখে এইগুলা খুঁজেন কেন? এসব বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
মাদরাসার ফল বিপর্যয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুর রহমান বলেন, ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পরপরই আমরা সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। উপযুক্ত জবাব না পেলে আমরা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহন করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমু’র সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
জোনাকি টেলিভিশন/এমইএইচকে/এসএইচআর/০৪-০৬-২০ইং
Leave a Reply