নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীর মাধবদীতে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, যুবলীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর মোঃ জাকারিয়াসহ দুইজন গুলিবিদ্ধের ঘটনায় পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন মানিককে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত ১টায় জাকারিয়ার বড় ভাই নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় মেয়র মানিকসহ মোট ১১ জনকে আসামী করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন আব্দুল আহাদ (২৫) পিতা- নান্নু মিয়া, মোজাম্মেল (৩৮) পিতা-মৃত মৃত হাবিবুল্লাহ, মাসুদ রানা ওরফে জুনিয়র মাসুদ (২৬) পিতা- রিপন মিয়া, শাহিন মিয়া (২৮) পিতা- মিজানুর রহমান, আতাউর ভুঁইয়া (২৮) পিতা- নান্নু ভুঁইয়া, আকরাম হোসেন (২৮) পিতা- মৃত ফিরোজ মিয়া, সাকিব (২৪) পিতা- রবিউল্লাহ, নুর মোহাম্মদ (৩০) পিতা- মৃত আঃ আউয়াল, সেন্টু শীল (২৫) পিতা- হনি শীল ও মনিরুজ্জামান ওরফে নাতি মনির(৪০) পিতা- মৃত আখতারুজ্জামান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বুধবার (১৬ জুন) বিকেলে মাধবদীর রমণী কমিউনিটি সেন্টারে নবগঠিত মাধবদী থানা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের পূর্ব নির্ধারিত প্রস্তুতি সভা চলছিল। অনুষ্ঠান চলাকালে মাধবদী শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মাধবদী পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক ১০/১২ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক নিয়ে সভায় উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানে বাধা প্রদান করেন। পরে অনুষ্ঠানের সভাপতি নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেন সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী সাংগঠনিক নিয়ম মেনেই সভা করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়রকে চলে যেতে অনুরোধ করলে মেয়র নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং এর পরিণাম ভালো হবে না বলে সবাইকে শাসিয়ে বের হয়ে যান।
পরবর্তীতে রাত পৌনে ৮টার দিকে অনুষ্ঠান শেষে নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় মাধবদী পৌরসভা মোড়ে পাঁচদোনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহকে পেয়ে তার উপর হামলা করে তার গাড়ি ভাংচুর করা হয়। এসময় ৫নং আসামি শাহিন তাকে গুলি করলে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তিনি গাড়ি থেকে বের হয়ে কোনরকম পালিয়ে বাঁচেন। একই সময় সাবেক কাউন্লির জাকারিয়া ও তার চাচাতো ভাই আবুল কালাম পৌরসভার মোড় হয়ে যাওয়ার পথে মেয়রের নির্দেশে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় এবং জাকারিয়ার মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এসময় মেয়র তার নিজস্ব পিস্তল থেকে জাকারিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়লে তার ডান পায়ে একটি গুলি বিদ্ধ হয়। এ অবস্থায় আবুল কালাম এগিয়ে আসলে ২নং আসামী আব্দুল আহাদ তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তা কালামের পায়ে বিদ্ধ হয়। এছাড়াও মানিক ও জাহাঙ্গীর নামের অপর দুই ব্যক্তির মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
একই ঘটনায় মেয়র গ্রুপের পক্ষ থেকে আহত জাকারিয়াকে আসামী করে পাল্টা মামলা হয়েছে। মেয়র মোশাররফ হোসেন মানিক গ্রুপের সমর্থক মোজাম্মেল মিয়া বাদী হয়ে গুলিবিদ্ধ জাকারিয়াসহ মোট ৭ জনকে আসামী করে মাধবদী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় বাদী মোজাম্মেল মিয়াকে লক্ষ্য করে জাকারিয়া গুলি ছুড়ে এবং তার আত্মীয় মামুন মিয়া (৩৫) পিতা- তমিজউদদীন এর গালে ছুরি দিয়ে পোচ দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান পাল্টাপাল্টি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উভয় পক্ষই মামলা দায়ের করেছেন। এব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহসহ আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
Leave a Reply