অশিক্ষিত বন্ধুর চেয়েও শিক্ষিত শত্রু অনেক উত্তম।’ এই প্রবাদ বাক্যটি নরসিংদীর আলোকবালী ইউনিয়নবাসীর মুখে মুখে। ইউপি নির্বাচনকে সামনে এলাকার বিভিন্ন বাজার, রাস্তার মোড়ে মোড়ে চায়ের কাপে ধোয়া তুলছেন কার হাতে শেখ হাসিনা নৌকা তুলে দিবে, কে পাচ্ছেন আ’লীগ দলী মনোনয়ন এই আলোচনায়। এবার চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন চায় আলোকবালী ইউনিয়নবাসী। শিক্ষার কোন বিকল্প নেই তাইতো একজন শিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিকে নৌকার মাঝি হিসেবে দেখতে চায়। আলোকবালী ইউনিয়ন নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ে শিক্ষা-দীক্ষায় যোগ্য প্রার্থী হিসেবে এড. মোঃ আসাদ উল্লাহ্কেই মনে করছেন এলাকাবাসী। তাছাড়া দল-মত নির্বিশেষে এলাকার সর্বমহলে তার রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা।
এড.আসাদ উল্লাহ্ নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালীর মুরাদনগর গ্রামের একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবার মোল্লা পরিবারে সন্তান। আলোকবালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়েছিল যাদের হাত ধরে তাদের মধ্যে অন্যতম এই পরিবারটি।
বিগত সময়ের চেয়ে বর্তমানে চরাঞ্চলের মানুষ অনেক সচেতন। সমাজের সর্বত্রই পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। আর এ পরিবর্তনের অংশ হিসেবে আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন চায় আলোকবালী ইউনিয়নবাসী। আধুনিক, যুগোপযোগী ও শিক্ষিত সমাজ বিনির্মাণে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আসন্ন আলোকবালী ইউপি নির্বাচনে একজন শিক্ষিত ও যোগ্য ব্যক্তিকে নৌকার মাঝি হিসেবে দেখতে চায় তারা।
এ দিকে, আলোকবালী ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ে শিক্ষা-দীক্ষায়, মেধা-মননে, মানুষের সুখ-দুঃখের সারথি ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উল্লাহ্কেই মনে ধরেছে এলাকাবাসীদের। তাছাড়া দল-মত নির্বিশেষে এলাকার সর্বমহলে তার রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হিসেবেই বহুল পরিচিত অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ্দের বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্প স্থাপন করেন। এখান থেকেই আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করা হতো। সেই সুবাদে তৎকালীন সময়ে এই বাড়ির মহিলারা মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়াতেন। আর পুরুষেরা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারের ব্যবস্থা করে দিতো, কেউ কেউ তাদের নদী পারাপার করে দিত। আবার কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের গোডাউন পাহারা দিত। এ ছাড়াও বুদ্ধি দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিল তারা। এই হিসেবে তৎকালীন সময়ে এই বাড়ির প্রাপ্তবয়স্ক প্রায় সকলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।
অ্যাড. আসাদ উল্লাহ্র বাবা ছিলেন ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসা সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এবং আমৃত্যু আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়ে যাদের হাত ধরে আলোকবালী ইউনিয়ন তথা নরসিংদী সদরে আওয়ামী লীগ টিকে ছিল তাদের মধ্যে তার ছোট দাদা ইদ্রিস আলী ও তার বাবা অন্যতম। এ ছাড়াও অ্যাড. আসাদ উল্লাহ্র আপন ফুফা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ছিলেন একজন অসীম সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা। যিনি তার বন্দুকের গুলিতে ছয়ন রাজাকারের বুক ঝাঁঝরা করে দিয়েছিলেন।
আসাদ উল্লাহ্র আপন মামা ফজলুর রহমানও (ফজু মিয়া) ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এ ছাড়াও তার পরিবারে বেশ কয়েকজন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে ছোটবেলা থেকেই একটি রাজনৈতিক আবহের মধ্যে বেড়ে উঠেছিল অ্যাডভোকেট মো. আসাদ উল্লাহ্। সেই হিসেবে তুলনামূলক কম বয়স থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি শুরু করেন। ফলে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তিনি আলোকবালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বালুর ব্যবসাকে উছিলা করে মূলত রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তার পরিবারকে দমন-পীড়নের লক্ষ্যে তিনি এবং তার চাচা আজিজ মোল্লা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। দীর্ঘ চার মাস কারা-নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে মুক্তিলাভ করেন তিনি। এ ছাড়াও দলের দুঃসময়ে দলের জন্য বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তাকে।
রাজনৈতিক মেধা, প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতাকে কাজে লাগিয়ে ছাত্র রাজনীতির পালা শেষ না করতেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে তিনিই আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। প্রথমে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীকালে রাজ্জাক চেয়ারম্যান খুন হওয়ার পর নেতৃত্ব শূন্য আলোকবালী ইউনিয়নের হাল ধরেন অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ্। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে কোনো এক অদৃশ্য কারণে সভাপতির পরিবর্তে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন। এখন পর্যন্ত সফলতার সাথে তিনি তার এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

বর্তমানে নরসিংদী সদর থানা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এভাবেই তিন পুরুষ ধরে আসাদ উল্লাহ্র পরিবার নিঃস্বার্থভাবে দল, দেশ, ইউনিয়ন ও সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করে আসছেন। সব মিলিয়ে এই পরিবারের রাজনীতির সুদীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও দলীয়ভাবে এখনও পর্যন্ত তাদের কোনো বিশেষ মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই এলাকাবাসীর দাবি, জননেত্রী শেখ হাসিনা যেন দলের জন্য তাদের তিন পুরুষের বিগত দিনের কর্মদক্ষতা ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ্কে আগামী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে আলোকবালী ইউনিয়নের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর সেবা করার সুযোগ প্রদান করেন।
এর আগেও বিগত ইউপি নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু তখন তাকে মনোনয়ন না দিয়ে পরবর্তীতে তাকে মূল্যায়ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। বিগত পাঁচ বছর ধরে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। মেধা, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা সবমিলিয়ে একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে এলাকার অধিকাংশ মানুষ বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চায় অ্যাডভোকেট আসাদ উল্লাহ্ আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোক। সেই হিসেবে অ্যাড. আসাদ উল্লাহ্ আসন্ন আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
Leave a Reply