1. mostafa0192@gmail.com : admin2024 :
  2. arswaponbd6@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:১২ অপরাহ্ন

রাত পোহালেই রায়পুরার  ১০ ইউপিতে ভোট

মো. মোস্তফা খান:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১০ নভেম্বর, ২০২১
  • ৪৪৮ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বিতীয় ধাপে ঘোষনাকৃত তফসিল অনুযায়ী রাত পোহালেই আগামীকাল ‍বৃহস্পতিবার ১১ নভেম্বর নরসিংদীরর রায়পুরা উপজেলার  ২৪টি  মধ্যে ১২ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়নগুলোর  মধ্যে রয়েছে রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ, মির্জানগর, হাইরমারা, চরসুবুদ্ধি, নিলক্ষা, বাশঁগাড়ী, পাড়াতলী, চরমধুযা, শ্রীনগর, ও মির্জারচর।

নির্বাচনকে সামনে রেখে গত কয়েকদিন ইউনিয়নগুলোতে ছিল নির্বাচনী উত্তাপ। ইতোমধ্যে পাড়াতলী, বাঁশগাড়ী, আমিরগঞ্জ ও হাইরমারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় ৩ জন নিহতসহ  শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটেছে। এমতবস্থায় সুষ্ঠ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশয়সহ চরম উৎকণ্ঠা ও দ্বিধা-দন্ধে আছেন প্রার্থীসহ সাধারণ ভোটাররা। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে সতর্কবস্থায় রয়েছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।

নির্বাচনী এলাকা ঘুরে জানা যায়, নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীরা গতকয়েকদিন নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল । কাক ডাকা ভোর হতে মাঝ রাত পর্যন্ত চলে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্ঠা। ভোরটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনার সাথে দিয়েছেন বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও।

এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে ব্যবসা বেশ চাঙ্গা ভাব ছিল পাড়া-মহল্লায় অবস্থিত  চায়ের দোকান মালিকরা। ভোর থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত চায়ের দোকানগুলোতে প্রার্থীদের নিয়ে চলে আলোচনা ও সমালোচনা ঝড়।

শুধু তাই নয়, প্রার্থীদের নির্বাচনী ক্যাম্পগুলোতেও ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বিকটশব্দে প্রার্থীদের জয়গান।

অপরদিকে, বিশেষ করে চরাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোতে প্রতিটি প্রার্থীই রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। আওয়ামীলীগের বিদ্রোহীরা দলের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা কেউ কাউকে চুল পরিমানও ছাড় দিতে নারাজ। তাই জয় নিশ্চিতের লক্ষে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিচ্ছেন সমর্থকরা।

এলাকাবাসী জানান, তফসিল ঘোষনার পর থেকে এই কয়েক দিনে  উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের কাচারীকান্দী এলাকায় দুগ্রুপের সমর্থকদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত সহ ৩ জন নিহত হয়।  বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে দুইপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলি বিনিময়ের ঘটনায় ৩০/৩৫ জন আহত হয়। আমিরগঞ্জ ইউনিয়নে দুইপক্ষের হামলায় ৮/১০ জন আহতসহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে এবং হাইরমারা ইউনিয়নে এক প্রার্থীর গণসংযোগকালে অপর আরেক প্রার্থীর সমর্থকদের  হামলায় ৬/৭ জন আহত হয়।

এছাড়াও মির্জানগর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে  প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীর প্রতীক আগুনে পুড়িয়ে ফেলাসহ, প্রচার মাইক ভাংচুর, পোস্টার ছিড়েফেলাসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মির্জানগর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হুমায়ুন কবির সরকার প্রতিপ্রক্ষের সমর্থকরা তার নির্বাচনী প্রতীক পুড়ানোসহ পোস্টার-ব্যানার সরিয়ে ফেলার অভিযোগ করেন।

অপরদিকে ওই ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীক ডাঃ ফরিদ মিয়া, তার গণজোয়ারে ঈর্ষান্নিত হয়ে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা প্রচার মাইক ভাংচুরসহ সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেন।

আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম ফজলুল করিম ফারুক জানান, প্রতিপেক্ষর সমর্থকরা এলাকার জনসাধারনকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং প্রচারনায় বাঁধা দিচ্ছে। এমতবস্থায় সুষ্ঠ ভোট নিয়ে আমরা শংকিত।

স্থানীয় সচেতন মহল জানান, প্রতিটি ইউনিয়নেই ক্ষমতাসিন দল আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর বিদ্রোহী হিসেবে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন একাধিক প্রার্থী। ফলে আওয়ামীলীগ সমর্থিত সাধারণ ভোটাররা পড়েছেন বিপাকে। এরই প্রেক্ষিতে বিশেষ করে চরাঞ্চলের ৫/৬ টি ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলোকে ঝুকিপূর্ণ মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা।

গোলাপ মিয়া, সালাহউদ্দিন, সোহেল মিয়া, মমতা বেগম সহ বেশ কয়েকজন ভোটার বলেন, আর ভুল করবেন না। এবার দেখে শুনে বুঝে সৎ, যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিবেন।

এলাকার সাধারণ ভোটাররা বলেন, নির্বাচন আসলে বসন্তের কোকিলের মত একাধিক প্রার্থীর মুখ দেখা যায়। উন্নয়নের প্রশ্রিুতিও দেয়। কিন্তু পরাজয় হলে তাদেরকে আগামী পাঁচ বছর আর খুঁজে পাওয়া যায় না।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় ধাপের তফসিলকৃত ১০ টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ৫৩ জন। এর মধ্যে সাধারন সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৯৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে হয়েছেন ১০৯ জন।

মির্জারচর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত মো. ফিরোজ মিয়া (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন (আনারস), তকদির আলম (চশমা) মোহাম্মদ কবির হোসেন  মোটরসাইকেল), মো আব্দুল হান্নান (ঘোড়া) ও মো. জাফর ইকবাল মানিক (টেলিফোন)।

বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আশরাফুল হক (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেম (মোটর সাইকেল), আসাদুর রহমান (আনারস), রাতুল হাসান (টেলিফোন)।

পাড়াতলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. ফেরদৌস কামাল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বারিক (টেলিফোন), মাসুদুর রহমান (অটোরিক্সা), মেজবাহ উদ্দিন (চশমা), মো. রফিকুল ইসলাম (আনারস), মো. হাবিবুর রহমান চৌধুরী (মোটর সাইকেল) ও ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থী বিল্লাল হোসেন (হাতপাখা)।

শ্রীনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রিয়াজ মোর্শেদ খান রাসেল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান আযান (আনারস), মোহাম্মদ নূরুজ্জামান চৌধুরী (চশমা) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত আব্দুস সালাম (হাতপাখা।

হাইরমারা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. কবির হোসেন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুল হক বাবলা (চশমা), মো. কামরুজ্জামান (আনারস) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ ইউসূফ মিয়া (হাতপাখা)।

চরমধুয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. নূর আলম ফকির (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী আহসান সিকদার (চশমা), কাজী এহসানুল হক (আনারস),  মো. মাইনূল ইসলাম তালুকদার (ঘোড়া) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত ইকবাল হোসেন (হাতপাখা)।

মির্জানগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. হুমায়ুন কবির সরকার (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহম্মেদ (মোটর সাইকেল), মো. বশির উদ্দিন সরকার রিপন (আনারস), মো. সুমন মিয়া (অটোরিক্সা), হুমায়ুন কবির শান্ত (চশমা) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দানিছ মিয়া (হাতপাখা)।

আমিরগঞ্জ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শাহানা বেগম (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম ফজলুল করিম ফারুক (আনারস), কাজী নজরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মো. ফজলুল হক মোল্লা (হাতপাখা)।

চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দিন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোখলেছুর রহমান (ঘোড়া), মো. ইমাম উদ্দিন (মোটর সাইকেল), মো. কবির মিয়া (রজনীগন্ধা), মো. সুলায়মান খন্দকার (আনারস), রোকনুজ্জামান সরকার (চশমা) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত শের আলী (হাতপাখা)।

নিলক্ষা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মো. তাজুল ইসলাম (নৌকা), আক্তারুজ্জামান (টেবিল ফ্যান), আব্দুল হক সরকার (ঘোড়া), টিটো মিয়া (মোটর সাইকেল), শাহজাহান মিয়া (চশমা), রাজিব আহমেদ (আনারস) প্রতীক নিয়ে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন।

এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়পুরা সার্কেল সত্যজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমান পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাঠে রয়েছেন। যখন যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি সেখানে আমরা পৌছে পরিস্থিতি শান্ত রাখছি।

এ ব্যাপারে কথা হয় রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ সুমন মিয়ার সাথে। আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য ১০ টি ইউপি নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ে কি ধরনের প্রস্তুতি আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন কেন্দ্রই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছিনা, তবে চরাঞ্চলের ৫/৬টি ইউনিয়নের সবকটি কেন্দ্রই আমরা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি নিয়েছি।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠিতব্য ১০ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৮ হাজার, ৬শ ৫৪ জন। ভোট কেন্দ্র ৯৬ টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৩৬ এবং অস্থায়ী কক্ষের সংখ্যা ৪১ টি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Jonaki Media and Communication Limited
Design By Khan IT Host