1. mostafa0192@gmail.com : admin2024 :
  2. arswaponbd6@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন

রায়পুরার চরাঞ্চলে গ্রাম ছাড়াদের গ্রামে  ফেরাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ;  ২ জন নিহত, আহত ১০

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২২
  • ৭৩২ বার পঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও  ও গ্রাম ছাড়াদের গ্রামে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে নরসিংদী রায়পুরার প্রত‍্যন্ত চরাঞ্চল বাশঁগাড়ী ও মির্জাচরে বিবাদমান দুটি গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১জন ও হাত কাটা অবস্থায় ১জনসহ মোট ২ ব‍্যক্তি নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নূরুল নামে একজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে ওই দুই চরাঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় সংঘর্ষের আশংকায়  এলাকায় রায়পুরা থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে রায়পুরার প্রত‍্যন্ত চরাঞ্চল বাশঁগাড়ী ও মির্জাচর ইউনিয়নে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবেল মিয়া (৩২) রায়পুরার মির্জাচরের মানিক মিয়ার ছেলে এবং নিহত মামুন মিয়া (৩০) একই ইউনিয়নের বাবুল মিয়ার ছেলে। রুবেল মির্জাচরের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকুল ইসলামের চাচাতো ভাই এবং মামুন মির্জাচরের বর্তমান চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিকের সমর্থক ছিলেন। এছাড়া এ ঘটনায়  গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত নূরুল হক (১৯) বাশঁগাড়ী গ্রামের সাধন মিয়ার ছেলে। সে রায়পুরার বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদী রায়পুরার বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের সদ্য সাবেক আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সাথে বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাকির হোসেন রাতুলের দ্বন্ধ চলে আসছিল। তাদের এ দ্বন্ধের জের ধরে দুপক্ষের মধ্যে একাধিক বার হামলা-পাল্টা-হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটে। ওই সব হামলায় একাধিক লোক নিহতসহ প্রায় ৩ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। এরই মধ্যে ২য় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পায় তৎকালিন চেয়ারম্যান আশরাফুল হক। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে ক্ষোব্ধ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়  জাকির হোসেন রাতুল। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দন্ধ আরো তীব্র হয়। এদিকে নির্বাচনী বৈতরনী পার হতেই উভয় পক্ষ নির্বাচনের দিন ভোররাত থেকেই কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালায়। এরই জের ধরে রাত ৩টার দিকে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাকির হোসেন রাতুল এর সমর্থকরা দেশী-বিদেশী অস্ত্র-সস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে প্রতিদন্ধী চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। ওই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে নির্বাচনের দিন সকালে নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান রাতুলের ২ সমর্থক ও আশরাফুলের ১ সমর্থকসহ ৩ জন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে শতাধিক মানুষ। ১১ নভেম্বর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন রাতুল বিজয়ী হওয়ার পর এলাকা ছাড়ে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল হক ও তার সমর্থকরা।
এদিকে নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর পরাজয়ের পর মির্জাচর ইউনিয়নের ফারুকুল ইসলাম ও তার সমর্থকরাও গ্রাম ছাড়া হয়।
প্রায় আড়াই মাস গ্রাম ছাড়া থাকার পর বাশঁগাড়ী ও মির্জাচরের নৌকা প্রতিকের লোকজন সংঘবদ্ধ হতে থাকে। পরে রবিবার সকালে প্রথমে  তারা আশরাফুল হক ও তার সমর্থকদের নিয়ে বাশঁগাড়ী গ্রামে ফেরেন। এতে বাধা দেয় বাশঁগাড়ীর বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল সমর্থকরা। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে ফারুকুল ইসলামের চাচাতো ভাই রুবেল মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। আহত হয় রো ৫ জন। পরে আশরাফুল হক ও তার সমর্থকরা গ্রামে ফেরার পর তাদের সহায়তা নিয়ে মির্জাচর ইউনিয়নের ফারুকুল ইসলামের সমর্থকরা মির্জাচর গ্রামে ফেরেন। ওই সময় মির্জাচরের নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক সমর্থকরা বাধা দেয়। এসময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। । এ সময় হাত কাটা অবস্থায় ১ জনকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া ও পরে নবীনগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর বিকেলে ভৈরবে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। ওই সময় আরো ৫ জন আহত হয়।
পরে মির্জাচর ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক সমর্থকদের বাধা মুখে ফারুকুল সমর্থকরা গ্রামে ঢুকতে পারেনি। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মির্জাচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকুল ইসলাম বলেন, বাশঁগাড়ীর সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুলের লোকজনকে গ্রামে তুলে দিতে মির্জাচর থেকে লোকজন বাশঁগাড়ী যায়। সেখানে তাদের ধাওয়া দিয়ে মির্জাচর পাঠালে বাশঁগাড়ীর রাতুল চেয়ারম্যানের হয়ে মির্জাচরের মানিক চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়। ওই সময় প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার চাচাতো ভাই রুবেলের মৃত‍্যূ হয়।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে  মির্জাচর ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক সাংবাদিকদের বলেন, মূলত বাশঁগাড়ীর সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল ও মির্জাচরের ফারুকুল ইসলাম এক গ্রুপ। তারা একে অপরকে বরাবরই সহায়তা করে। রবিবার আশরাফুলের লোকজনকে গ্রামে তুলে দিতে ফারুকুলের লোকজন লাঠিয়াল হিসেবে বাশঁগাড়ী যায়। সেখানে রাতুল চেয়ারম্যানের লোকজন তাদের বাধা দেয় এবং ধাওয়া দিয়ে মির্জাচর এনে গন্ডগোল করেন। এতে আমার লোকজন বাধাঁ দিতে এলে আমার সমর্থনকারী এক জন নিহত হয়। এখানে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে এ ঘটনায় আমার ৪/৫ জন লোক আহত হয়েছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোবিন্দ সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রামে ফেরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে। দুই এলাকার পরিস্থিতিই স্বাভাবিক রয়েছে। পরবর্তী সংহিসতা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Jonaki Media and Communication Limited
Design By Khan IT Host