1. mostafa0192@gmail.com : admin2024 :
  2. arswaponbd6@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৮ অপরাহ্ন

রায়পুরায় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ: ইউপি সদস্যদের অনাস্থা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩
  • ৩৬৫৮ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নরসিংদীর রায়পুরায় বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে উত্তরবাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান হাবিব উল্লাহ এর বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে নরসিংদী জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন সদস্যদের পক্ষে ৯নং ওয়ার্ডের মো. আবু চাঁন।

লিখিত অভিযোগে ১নং ওয়ার্ডের মো. রানা, ২নং ওয়ার্ডের শব্দর আলী, ৩নং ওয়ার্ডের আসাদুল, ৫নং ওয়ার্ডের সোহাগ আহমেদ, ৬নং ওয়ার্ডের জলিল মিয়া, ৭নং ওয়ার্ডের রহমত আলী, ৮নং ওয়ার্ডের মো. শিশু মিয়া ও ৭,৮ ও নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য মনিরা আক্তার স্বাক্ষর করেন।

অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়নন পরিষদ) আইন-১০০% এর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন এর ৩৯ ধারা এবং ৩৯ এর (১) থেকে ৩৯ এর (১৫) এ উপধারা অনুযায়ী উত্তর বাখরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহ এর বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব জ্ঞাপন করছি। বর্তমানে তার অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকান্ডে ‘ইউনিয়ন পরিষদ ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্য হচ্ছে চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ন্যায় সঙ্গত কার্যক্রমে বাধা দিয়ে আসছে।

তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের অজ্ঞাত রেখে তার ব্যক্তিগত বহিরাগত লোক দিয়ে অবৈধ উপায়ে কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকেন। ইতঃপূর্বে একাধিক বার প্রতিবাদ করলে উনি তা আমলে নেননি। চেয়ারম্যান তার ভাগিনাকে দিয়ে অত্র ইউনিয়ন ও রায়পুরা উপজেলার অন্যন্যা ইউনিয়নের লোকদের কাছে ভূয়া সনদের ব্যবসা করে আসছে। একই ব্যক্তির একাধিক জন্মসনদ তৈরি, বয়স বাড়ানো-কমানো, ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্ট তৈরিতে সহযোগিতা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের বয়স বাড়িয়ে বাল্য বিবাহের সহায়তা করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা অবৈধ ভাবে আদায় করছে। অত্র ইউনিয়ন পরিষদকে এসব ভূয়া সনদের আখড়া হিসেবে পরিণত করেছে।

এছাড়া বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ডের জন্য সরকারি অফিসের নামে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। যারা টাকা দিতে পারেনা প্রকৃত সুবিধাভোগী হওয়া সত্তেও তাদের ভাতা কার্ড হয়না। কৃষি সহায়তা সামগ্রী ও অনুদান তার নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে ইস্যু করে আত্মসাৎ করছে। ইউনিয়নের দারিদ্র জনগোষ্ঠীর বরাদ্দ সরকারি ভিজিডি, ত্রান ও উপহার সামগ্রী তার মনগড়া মত বিলি বন্টন করে। এক্ষেত্রে সদস্য ও সদস্যাগণকে জানানো হয়না। যার ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা না পেয়ে তার পকেটের লোকজন বার বার এসব সুবিধা পেয়ে থাকে। অত্র ইউনিয়নে গ্রাম আদালত আইন-২০০৬ এর ৫ ধারা লঙ্গন করে তার পছন্দের দালাল ইতর শ্রেণীর লোকদের দিয়ে গঠন করে পক্ষপাতিত্ব ও অর্থের বিনিময়ে পূর্বে কন্ট্রাক করে গ্রাম আদালতের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আদালতের বিভিন্ন দেওয়ানী ও ফৌজদারি মামলা থাকা স্বত্তেও কিছু অসৎ ব্যক্তির ও পুলিশের ভয় ভীতি দেখিয়ে ভোক্তভোগীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে। জোর করে মানুষের সম্পতি দখল ও উচ্ছেদ করে দেওয়া ইত্যাদি সে অর্থের বিনিময়ে করে থাকেন। এসব কাজ করতে গিয়ে তার বিরুদ্ধে আদালতে ভুক্তভোগীরা মামলা করেছেন।

সরকার কর্তৃক টি.আর, কাবিখা, থোক বরাদ্দ বাস্তবিক অর্থে কোন কাজ না করে বা আংশিক করে অর্থ লুটপাট করেছে। অত্র ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন আয়ের খাত থেকে ভূয়া প্রকল্প ও ভাউচার দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছে। আয়-ব্যয়ের ব্যাংকিং হিসাব রেজিস্টার সে রক্ষা করে না। অত্র ইউনিয়ন পরিষদ মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ কোন কাজ না করেই শুধু মাত্র রং করে সম্পূর্ণ অর্থ তার ভাইয়ের সহযোগীতায় লোপাট করেন। কোন সদস্য প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী দেখিয়ে নিজেই নিম্ন মানের কাজ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে ‘অর্থ উঠিয়ে নিচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সদস্য তার অগোচরেই তা সম্পূর্ণ করে। উনি নিজেকে অত্র ইউনিয়নের ম্যাজিস্ট্রেট দাবি করেন। তিনি আমাদের কোন পরামর্শ আমলে নেন না। তিনি নিজেকে সর্বময় দাবি করেন।

বার বার তাগিদ দেওয়া সত্বেও স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী অদ্যবধি প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন নি। তিনি আইন লঙ্গন করে স্বেচ্ছাচারীতার চরম মাত্রায় পৌঁছেছেন তাই আমরা তার ভাগীদার হতে চাই না। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত কালে যাবতীয় প্রমান আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট উপস্থাপন করিব। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইনের ৩৪, ৩৫ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনে বিনীত প্রার্থনা জানাচ্ছি।

বর্তমান জননেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয়ভাবে তৃণমূলে জনগণের সুবিধার্থে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে শক্তিশালী করেছেন। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় নির্বাচনের সময় আমরা জনগণের সাথে ওয়াদাবদ্ধ ছিলাম তাদের জনগণের সেবা করে যাব। কিন্তু সেবা তো দূরের কথা চেয়ারম্যানের দূনীর্তি ও ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অবৈধ কার্যকলাপের দরুন আমরা কিছুই করতে পারছি না। এমনকি ইউনিয়নবাসী তার যাবতীয় কার্যকলাপে খুবই ক্ষুব্ধ।

এমতাবস্থায় উল্লেখিত কারণে ও অনান্য জটিল কারণে আমরা পরিষদ সদস্য, সদস্যাগণ উক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রদান করিলাম।

এ ব্যাপার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শফিকুল ইসলাম বলেন, উত্তরবাখরনগর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাবের অভিযোগ পেয়েছি। ইউএনও স্যার ছুটিতে আছেন। স্যার আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হোন হাবিব উল্লাহ হাবিব।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Jonaki Media and Communication Limited
Design By Khan IT Host