1. mostafa0192@gmail.com : admin2024 :
  2. arswaponbd6@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৩ অপরাহ্ন

লাকসাম হানাদার মুক্ত দিবস কাল

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৮ বার পঠিত

কোহিনুর প্রীতি, লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

আগামীকাল ১১ ডিসেম্বর (বুধবার) লাকসাম হানাদার মুক্ত দিবস। পাকবাহিনীর কবল থেকে এই দিনে স্বাধীনতাকামী মুক্তিবাহিনী লাকসামকে হানাদার মুক্ত করেন।

২৫ মার্চ রাতে ঢাকা শহরে পাকবাহিনী বাঙ্গালি নিধন শুরু করলে লাকসামের স্বাধীনতাকামী মুক্তিপাগল মানুষ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওই সময় লাকসামকে ১,২,৩ ও ৪ নম্বর সেক্টরে ভাগ করা হয়। ৪টি জোনের কমান্ডের সঙ্গে একাধিক প্লাটুন গেরিলা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। এ,এফ কমান্ড ও বি,এল,এফ কমান্ড হিসেবে পরিচিত এ বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে শক্তিশালী ছিল। বৃহত্তর লাকসাম উপজেলা সদরের উত্তরে বিজয়পুর, পশ্চিমে চাঁদপুর, দক্ষিণে নোয়াখালী ও পূর্বে ভারত সীমান্ত ছিল পাকবাহিনীর যুদ্ধের এলাকা। লাকসামের রেলওয়ে জংশন এলাকায় তৎকালীন চাঁদপুর টোবাকো ফ্যাক্টরীতে (বর্তমানে প‍্যাসিফিক কনজ‍্যুমার ফুডস) পাকবাহিনীর ঘাঁটি ছিল। নিজেদের ঘাঁটিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে নির্বিচারে হত্যা করে লাকসাম রেলওয়ে জংশনের দক্ষিণ পাশে বেলতলী নামকস্থানে গর্ত করে পুঁতে রাখতো।

পাকবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে লাকসাম জংশন এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়। এ বাহিনীর দায়িত্ব পালন করেন কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার সুবেদার আবদুল জলিল ওরফে লাল মিয়া, ক্যাপ্টেন মাহবুব, ব্রিগেডিয়ার দিদারুল আলম, মেজর এনাম আহমেদ, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি ফ্লাইট সার্জেন্ট ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধের সময় লাকসামের আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকবাহিনীর প্রচন্ড সংঘর্ষ বাঁধে। এ সংঘর্ষে দু’জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বৃহত্তর লাকসামের হাসনাবাদে (বর্তমানে মনোহরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভুক্ত) পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ওইসময় পাকবাহিনী হাসনাবাদের সবগুলো বাড়ীঘর পুড়িয়ে দেয়। লাকসামের গৈয়ারভাঙ্গা বর্তমানে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার অন্তর্ভুক্ত) এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে দেলোয়ার, হারুন, মোখলেছ ও মনোরঞ্জন নামে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। খিলা রেলওয়ে ষ্টেশনে বর্তমানে মনোহরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্ভুক্ত) চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জের দুই ছাত্র আনোয়ার হোসেন ও আকরাম আলী পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন লাকসাম অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে বহু মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। শহীদদের মধ্যে মোস্তফা কামাল ও সোলাইমান নামে দুই সহোদরের স্মৃতি আজও কেউ ভুলতে পারেনি। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় মিশ্রি এলাকার আবদুল খালেক, কামড্ডা গ্রামের আবুল খায়েরকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে নির্যাতন শেষে বেলতলীতে পুঁতে রাখে। এই বেলতলি বধ‍্যভূমিতে এখনো প্রায় ১০ হাজার লোকের হাঁড় কঙ্কাল রয়েছে। মাটি খুঁড়লেই মিলে এসব হাঁড় কঙ্কাল।

এদিকে লাকসাম রেলওয়ে জংশনের উত্তরে পেরুল তেঁতুল তলায় মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীকে প্রতিরোধ করে। মুক্তিকামী জনতা পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ লড়াই চালিয়ে গেলে ৮ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পাকবাহিনী পিছু হটে যায় এবং ১১ ডিসেম্বর লাকসাম অঞ্চল হানাদার মুক্ত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউসার হামিদ জানান, লাকসাম হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে লাকসাম মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে দোয়া মোনাজাত ও আলোচনা সভাসহ ব‍্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 Jonaki Media and Communication Limited
Design By Khan IT Host