ডেস্ক রির্পোট
উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি ভাটির দিকে নেমে আসায় শরীয়তপুরের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে জেলার চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।
সরেজমিনে শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখে যায়, জেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ঘাট ও বাড়ি ঘরে পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার। পদ্মানদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধি পেয়ে সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২দিনে পানি বৃদ্ধির ফলে নড়িয়া-জাজিরা রাস্তার মোক্তারচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি এলাকায় প্রায় ৩০০ মিটার রাস্তা তলিয়ে গেছে। ফলে ওই রাস্তায় গণ-পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নড়িয়া উপজেলার গাগরি জোড়া, পৌর এলাকার ঢালিপাড়া, কলুকাঠি, জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর সারেংকান্দি, পাচুখার কান্দি, কাজিয়ারচর, পালেরচর, বড়কান্দি, পূর্বনাওডোবা, জাজিরা ও কুন্ডেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে।
বিশেষ করে পৌর এলাকার ফকির মাহমুদ আকন কান্দি ও জাজিরা ইউনিয়নের পাতালিয়া কান্দি, দুব্বাডাঙ্গা, ভানু মুন্সি কান্দি, হাওলাদার কান্দি, লখাই কাজি কান্দি, জব্বার আলী আকন কান্দি, জব্বার মোল্যা কান্দি ও গফুর মোল্যা কান্দি ওই এলাকায় প্রায় ১ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা নওয়াপাড়া নশাসন, জপসা, ভোজেশ্বর সদর উপজেলার পালং, তুলাসার, আংগারিয়া, বিনোদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন নিচু এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। নিচু এলাকার কাচা রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। ওই সব এলাকায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। হাস মুরগী পশু পাখি নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছে।
ওই সব এলাকায় পাট, রোপা আমন, বোনা আমন, শাক সবজি ও আখ খেত তলিয়ে গেছে। ফলে এসব এলাকার শত শত একর জমির ফসল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কুরবানির জন্য পালিত গবাদি পশু নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকেরা মারাত্মক বিপদে পড়েছে।
জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আকতার মাদবর জানান, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি নেমে আসায় জেলার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া, জাজিরা ও সদর উপজেলার চরাঞ্চল সহ নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
এ ব্যাপারে জাজিরা ইউনিয়ন পরিষদের অপর এক সদস্য জয়নাল মাদবর বলেন, বন্যার পানিতে আমাদের বাড়ি ঘর তলিয়ে গিয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানীয় জলেরও সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার তিনটি উপজেলায়ই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
জাজিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে জাজিরার ৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। গবাদি পশু, হাস-মুরগী নিয়ে কষ্টে আছে মানুষ। বিশুদ্ধ খাবার পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। আমরা তালিকা করতে শুরু করেছি।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, বন্যার পানিতে নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর, মোক্তারচর ও পৌর এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে। এখনো কোনো লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে আসেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন শুরু হয়েছে। তালিকা করা হলে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।
জোনাকী টেলিভিশন/এসএইচআর/১৮জুলাই ২০২০ইং
Leave a Reply