নিজস্ব প্রতিবেদক
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়) খুলে দেওয়া হবে। দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের ভারতীয় বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ চলছে। এর মধ্যেও কেউ কেউ স্কুল কলেজ খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রাণঘাতি করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে যারা দাবি তুলেছেন, তাদের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে সংসদ নেতার সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন। সকাল ১১ টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘এখানে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়ার দাবি উঠছে। কিন্তু আসল কথা হলো যাদের বাচ্চারা স্কুল-কলেজে যান, তারাই কিন্তু চাচ্ছেন না এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হোক। যাদের ছেলে-মেয়েরা যায় না, তারাই বেশি কথা বলছেন। আমরা এরই মধ্যে শিক্ষকদের টিকা দিয়েছি। শিক্ষার্থীদেরও দিয়ে দেবো। স্কুল বন্ধ আছে। কিন্তু পড়াশোনা যেন বন্ধ না হয়। আমরা সংসদ টিভিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের একটু ক্ষতি হচ্ছে। টিকা দিয়েই আমরা স্কুল-কলেজ খুলে দেবো। লেখাপড়া শিখবে। কিন্তু জেনেশুনে এর জন্য একটি শিশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবো কি না, সেটা চিন্তা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ঠিক যখন সিদ্ধান্ত নিলাম স্কুল খুলব তখনই করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ল সারাবিশ্বে, সেই ধাক্কাটা লাগলো আমাদের দেশেও। যাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়ে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় সেই বাবা-মা ই কিন্তু চান না তাদের বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে। অথচ এটা নিয়ে সব থেকে বেশি সোচ্চার যাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যায় না। পড়েই না বা পড়াশোনা করার মতো ছেলে মেয়ে নাই তারাই বেশি কথা বলে। কিন্তু যাদের যায়, তারা তো চাচ্ছেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোট্ট শিশুদেরও তো করোনা হচ্ছে। আমরা জেনে শুনে লেখাপড়া শিখব কিন্তু লেখাপড়ার জন্য মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেব কিনা সেটাও একটু বিবেচনা করতে হবে। স্কুল বন্ধ আছে। পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য এই সংসদ টিভির মাধ্যমে বিভিন্ন ক্লাস প্রতিদিন প্রচার হচ্ছে। টিকা দেওয়ার পরই সব স্কুলগুলো খুলে দেব।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে বিরোধী দলীয় উপনেতার দাবি প্রসঙ্গে সংসদ নেতা বলেন, বিদেশে আমাদের নাতি-পুতিরা পড়াশোনা করে। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। অনেকে পরিচিত জন পড়ে। সেখানে দেখেছি সবাই অনলাইনে পড়াশোনা করছে। এটা শুধু বাংলাদেশের নয় সারা বিশ্বেরই এই অবস্থা। আমরা ইতোমধ্যে শিক্ষকদের টিকা দিয়েছি। ছাত্রদেরও টিকা দিব। তারপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের ফলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসা আগামী মাসেও খুলছে না। দেশে করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ভাইরাসের বিস্তার রোধে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বাড়ানো হয়।
Leave a Reply