নিজস্ব প্রতিবেদক
নরসিংদীর শিবপুরের খড়িয়া তামিরুল মিল্লাত দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেনডেন্ট মো: হুমায়ূন কবীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগের বিপরীতে প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিরাপত্তা কর্মী ও আয় পদে নিয়োগ দেয়া নামে তিনি ওই সকল পদের প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করেন।গত ২১ জুন জাহাঙ্গীর হোসেন প্রধান নামে মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের এক কার্যনির্বাহী নরসিংদী জেলা প্রশাসক বরাবর নিয়োগ বাতিলসহ মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়ে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মাদ্রাসা সুপারের দুর্নীতির বিষয়টি জনসম্মুখে প্রকাশ হওয়ায় পরীক্ষা শুরুর পূর্বেই উপস্থিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার দাবী জানালেও সুপার তাদের দাবী অগ্রাহ্য করেন অবৈধ ভাবে নিযোগে পায়তারা করায় তিনি এ অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে জানা যায়, গত ২০জুন খড়িয়া তামিরুল মিল্লাত দাখিল মাদ্রাসায় নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার পূর্বেই মাদ্রাসা সুপার পদগুলোতে নিয়োগ দেয়ার নামে একাধিক প্রার্থীর নিকট থেকে চুক্তির মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করেন। নিরাপত্তা কর্মী পদের প্রার্থী দিপু খান এর নিকট থেকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে দেড়লাখ টাকা রফাদফা করে নগদ ৮০হাজার টাকা গ্রহণ করেন। একই পদে নয়ন প্রধান এর নিকট থেকে দেড়লাখ টাকা রফাদফা করে নগদ ১লাখ টাকা গ্রহন করেন। আয়া পদে প্রার্থী হোসনে আরার নিকট থেকে নগদ ৫০টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন।
ঘুষের টাকা লেনদেনের ভিডিও চিত্র জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়লে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো: জসিম উদ্দিন প্রধান, মাসুদা আক্তার ও মো: আসাদ মিয়া প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি রক্ষায় নির্ধারিত তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে পুনরায় তারিখ নির্ধারণ পূর্বক নিয়োগ দিতে মাদ্রাসা সুপারকে আহবান জানান। কিন্তু মাদ্রাসা সুপার পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের আপত্তি গ্রাহ্য না করে নির্ধারিত তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করেন। চাকুরী নামক সোনার হরিণ ধরতে মাদ্রাসা সুপারের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি হয়ে প্রার্থীরা ঘুষ দিতে বাধ্য হয়েছে।
শুধু তা-ই নয় মাদ্রসা সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ পরীক্ষার খাতা পাল্টিয়ে উত্তরপত্র জমা দেয়ার অভিযোগ করেছেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ। নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে পরিচালনা পর্ষদের ৩জন সদস্য ছাড়া বাকী সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন না। অনুপস্থিত সদ্স্যদের প্রভাবিত করে রেজুলেশন তৈরীর মাধ্যমে সুপার বিতর্কিত নিয়োগকে বৈধতা দিতে চাচ্ছেন। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের ধারণা আরো বেশী টাকা নিয়ে উক্ত পদগুলোতে অন্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন মাদ্রাসা সুপার।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসা সুপারিন্টেনডেন্ট মো: হুমায়ূন কবীর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে এসব তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে জোনাকী টেলিভিশনকে জানান।কিন্তু ভিডিও ফুটেজে টাকা লেনদেনের কথা বলা হলে, ঘুষ গ্রহণের কথাটি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি টাকা নিয়েছিলাম কিন্তু নিয়োগ দিতে পারিনি বিধায় তা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। পূণরায় নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হবে কিনা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে জানানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির পর এব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজন ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল সহ দুর্ণীতিবাজ মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নরসিংদী জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জোনাকী টেলিভিশন/এসএইচআর/২৮-০৬-২০ইং
Leave a Reply