রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা
কুড়িগ্রামের রাজারহাটের কৃষকরা সরিষা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলা জুড়ে যেদিকে চোখ যায় সেইদিকে সবুজের মাঠ জুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলের হাসি। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সাতটি ইউনিয়নে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষার চাষ। কৃষকেরা বলেন আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবার অধিক ফলনের আশা করছেন তারা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় সরিষার চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কম হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসল চাষে ঝুকেছেন। সরিষার তোলার পর একই জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে।
রাজারহাট কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১শ ৯৬ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে রাজারহাট ইউনিয়নে প্রায় ২০ হেক্টর , ঘড়িয়ালডাঙ্গা ৩৪ হেক্টর,ছিনাই ইউনিয়নে ৪০ হেক্টর, নাজিমখানে ২০ হেক্টর, বিদ্যানন্দে ৩৯, উমরমজিদ ২৫ হেক্টর ও চাকিরপশায় ১৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায় বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের সমারহ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষার ক্ষেত। এসময় চাষিরা জানান, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে ওই জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতি মধ্যে কোন কোন ক্ষেতে সরিষার দানা বাধতে শুরু করেছে। আবার কোথাও ফুল ফুঠেছে।
সরিষা চাষি নুরনবী জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫ শত টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মন। প্রতিমন সরিষার বাজার মূল্য ৮শ থেকে ৯শ টাকা।
রাজারহাট ইউনিয়নে দুধ খাওয়া গ্রামের চাষি মোহাম্মদ আলী মন্ডল এটম বলেন, ‘এবার প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে বারী ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি বাম্পার ফলনের আশা করছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সম্পা আকতার জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যে ভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে তা অত্যন্ত ইতি বাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের আরও একটি সাফল্য। দেশি জাতের সরিষার ৬০ থেকে ৭০ দিনে এবং উচ্চ ফলন শীল জাতের সরিষা উঠতে সময় লাগে ৭৫ থেকে ৮০ দিন। তিনি আরও বলেন, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং তেলের আমদানী নির্ভরতা কমে যাবে।
Leave a Reply