ডেস্ক রির্পোট
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হয়েছে শপিংমল ও দোকানপাট। দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ঈদকে সামনে রেখে ঝুঁকি নিয়ে খুলছে মার্কেটগুলো। তবে দেশের বেশিরভাগ শপিংমল ও দোকানপাট বন্ধ থাকছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিংমল ও দোকানপাট খোলার কথা থাকলেও অধিকাংশ স্থানেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, ফলে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি।
তথ্য মতে, শর্তসাপেক্ষে মার্কেটের দোকান খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হলেও অধিকাংশ জায়গায় মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। কিছু শোরুমের গেটে স্যানিটাইজার বা হাত জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ দোকানেই মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি।
মার্কেটগুলোর ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংকটের মধ্যে আমাদের দিন যাচ্ছে। এ মুহূর্তে সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে তা কিছুটা হলেও আমাদের সংকট কাটাতে সহায়তা করবে। সরকারের বিধি নিষেধ মেনে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান চালু করেছি।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সহসভাপতি ও ঢাকা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তৌফিক এহসান খান গণমাধ্যমকে বলেন, কিছু শপিংমল খুলছে। তবে অনেকে খুলছেন না। স্বাস্থ্যবিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে দোকানে বেচাকেনার কথা বলা হয়েছে সবাইকে।
ফাইল ফটো
তবে যেসব এলাকায় দোকানপাট খুলেছে, সেসব এলাকায় কেনাকাটার হিড়িক দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার পাশাপাশি মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বও। অনেক জায়গায় নামমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। এছাড়া শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেয়া হয়েছে আড়ংয়ের ১৪টি আউটলেট।
এদিকে, সারা দেশে দোকানপাট খোলার পর বিভিন্ন মার্কেট ও রাস্তায় ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা থাকলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হচ্ছে না।
এমনিতেই করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে উত্তরের জেলা রংপুরে। এরমধ্যে বিপনী বিতান খোলায় বেড়েছে শঙ্কা। ছালেক মার্কেট ছাড়াও নগরীর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বিপনী বিতানে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্য বিধি না মেনে চলছে কেনাকাটা। নিশ্চিত ঝুঁকি জেনেও ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই মানছেন না নির্দেশনা।
ফাইল ফটো
নিয়ম না মানলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার কথা জানায় দোকান মালিক সমিতি। আর স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে টাক্সফোর্স গঠনের কথা জানান জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
নরসিংদীতে ইন্ডেক্সপ্লাজাসহ কয়েকটি বিপনীবিতান বন্ধ থাকলেও নরসিংদী বাজার ও সিএন্ডবি রোডের বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানগুলোতে ব্যাপক ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। নরসিংদীর কালীবাজারের থান কাপড়ের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড়।সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই এখানে চলছে কেনাকাটার ধুম।
ফাইল ফটো
এদিকে মানুষকে ঘরে রাখতে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকলে সবকিছু তোয়াক্কা করেই যেন ঈদ কেনাকাটায় ছুটছে মানুষ।
লালমনিরহাটের বিপণিবিতানগুলোতেও কেউ মানছেন না কোনও স্বাস্থ্যবিধি। অন্যান্য বছর ঈদ বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় থাকলেও, এবার তাদের উপস্থিতি নেই।
সকাল থেকেই মেহেরপুরের হোটেল বাজার, বড় বাজার, গাংনী শহরসহ জেলার বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। এসব জায়গায় মানা হচ্ছে না কোন স্বাস্থ্যবিধি। অনেক জায়গায় সড়কে দেখা যায় যানজট।
জুয়েলারি দোকান ছাড়া শর্তসাপেক্ষে নাটোরে প্রায় সব ধরনের দোকানপাট খুলেছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কেনা-বেচায় সরকারি নির্দেশনা থাকলেও, অনেকেই তা মানছেন না।
এদিকে, কোনও কোনও জেলার ব্যবসায়ীরা সচেতন হয়ে দোকান না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৪ মে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দোকান ও শপিংমল ১০ মে থেকে খোলার কথা ঘোষণা করে সরকার। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা বলা হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার ক্রেতার নিজ এলাকার ২ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শপিংমলে কেনাকাটা করতে নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
এতে আরও বলা হয়, প্রত্যেক ক্রেতাকে নিজ পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স) সঙ্গে রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা মহানগরীতে শপিংমল ও মার্কেট খোলা রাখার বিষয়ে ১৪টি নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।
ডিএমপির নির্দেশনায় আরও বলা হয়, প্রতিটি শপিংমলের প্রবেশমুখে স্বয়ংক্রিয় জীবাণুনাশক টানেল বা চেম্বার স্থাপন করতে হবে এবং তাপমাত্রা মাপার জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি দোকানে পৃথকভাবে তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
Leave a Reply