নিজস্ব প্রদিবেদক
হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি না বাড়ায়ে দোয়া এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী। রবিবার (২৮ মার্চ) পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
হেফাজতে মহাসচিব বলেন, সোমবার (২৯ মার্চ) দোয়া মাহফিল ও শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।
নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, হেফাজতে ইসলাম মোদির আগমন প্রত্যাহার করার জন্য কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু মোদির আগমনের দিন হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না।
তিনি বলেন, হেলমেট বাহিনী দ্বীনের শত্রু, ইসলামের শত্রু। তারা কেউ হেফাজতের নয়। যারা কালেমা জানে বিশ্বাস করে তারা অন্তত বিজেপিকে ভালবাসতে পারে না।
হেফাজতে ইসলামের হরতাল সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের ভবিষ্যত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।
হেফাজতের এ নেতা আরও বলেন, প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আহতের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আটকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হোক আমরা চাই না। সরকার দলীয় লোক বাড়ি বাড়ি হামলার হুমকি দিচ্ছে। ২/১ দিনের মধ্যে দাবি মানা না হলে আমিরে হেফাজত বাবুনগরীসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা বসে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।
নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা কারও প্রতিপক্ষ নই। হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এই সংগঠনকে দমন করার কোনো কারণ নেই, যা সরকার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, আমাদের আজকের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিনা উস্কানিতে হামলা করা হয়েছে। শুধু রাস্তা থেকে হেফাজত কর্মীদের সরাতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হেফাজতে কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ মধুপুরী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের ঢাকা মহানগর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিব, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন, হেফাজত নেতা আতাউল্লাহ আমিন প্রমুখ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে। পরে এই হামলার প্রতিবাদে রোববার দেশব্যাপী হরতাল ডাকে হেফাজতে ইসলাম। এ হরতালে রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সংঘাতের ঘটনা ঘটে। হরতালকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, জেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ মার্কেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল, জেলা ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, জেলা সাব রেজিস্টার অফিসসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অফিস-প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বাজার এলাকায় পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সাথে হেফাজত নেতাকর্মী ও স্থানীয় কাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন মারা যান।
Leave a Reply