মোঃ সাইফুল ইসলাম রায়হান, চারঘাট (রাজশাহী):
‘আগের মতো ঝামেলা নেই। এখন হাসপাতালে ভালো সেবা পাওয়া যায়। করোনার সময় এমন ভালো সেবা পেয়ে আমরা খুশি।’ কথাগুলো বললেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা হলিদাগাছী এলাকার আশা বেগম। নরমাল ডেলিভারিতে মা হয়েছেন তিনি। তার মতো একইভাবে নরমাল ডেলিভারিতে মা হয়েছেন আরও ৭১৬ জন নারী। চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭১৬ শিশুর জন্ম হয়েছে নরমাল ডেলিভারিতে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত ৯ মাসে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭১৬ শিশুর স্বাভাবিক জন্ম হয়। এ সময়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ১০ টি শিশুর জন্ম হয়। সারাদেশে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে অনেক সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যখন ঠিকমতো সেবা না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে; ঠিক তখন অনাগত শিশুদের সুন্দরভাবে পৃথিবীতে স্বাগত জানাতে এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে করোনা ঝুঁকিতেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা। চিকিৎসক, নার্স-মিডওয়াইফ, ওয়ার্ডবয় ও কর্মচারী সবাই একই পরিবারের সদস্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই জরুরি বিভাগ, ফ্লু কর্নার, আউটডোর ও ইনডোরে ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে স্বাস্থ্য সেবায় রাজশাহী জেলার প্রথম হয়েছিল চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নরমাল ডেলিভারিতেও চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জেলায় প্রথম।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, গত ৯ মাসে দেশে চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে ৭১৬ শিশুর স্বাভাবিক জন্ম হয়েছে। গত অক্টোবর মাসে নরমাল ডেলিভারিতে ৯১ টি শিশুর জন্ম হয়েছে। আজ সোমবার একদিনে হয়েছে ৯টি। এছাড়াও রোগিরা প্রতিদিন ফ্লু কর্নার, আউটডোর ও জরুরী বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন।
চারঘার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মোজাম্মেল হক বলেন, একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব তার সবটুকু দিয়েই মানুষের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। করোনা পরিস্থিতিতে নিজের জীবনের ঝুঁকি থাকলেও দেশের দুঃসময়ে সেবার মাধ্যমে প্রসূতি মায়ের কোলে একটি সুস্থ ও ফুটফুটে শিশুকে তুলে দিতে পেরে নিজেদের গর্বিত মনে করি আমরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বলেন, সবার সহযোগিতায় হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের হার বাড়ছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে করোনা ঝুঁকিতেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
Leave a Reply