নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের তিন কোটির বেশি শিক্ষার্থীর জন্য ইউনিক আইডি বা একক পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ছকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে দিতে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, শিশু শ্রেণির (৫ বছর) থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণির (১৭ বছর বয়স) পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এই ইউনিক আইডি। এই আইডিতে ১০ সংখ্যা বা ১৬ সংখ্যার শনাক্তকরণ নম্বর থাকবে এবং এসব তথ্য পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। এরপর থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে আর আলাদাভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হবে না।
দেশের সব শিক্ষার্থীর জন্য আইডি কার্ড প্রস্তুত করার লক্ষে ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন অনলাইনভিত্তিক করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত ৯ মে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের এ নির্দেশনা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্ম সনদ নম্বর ও জন্ম তারিখ অনলাইনে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের ডাটাবেজে যাচাই করার পর ইউনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে হাতে লেখা জন্ম সনদের নম্বর অনলাইনে ভেরিফাই করা যাবে না।
সেই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ অনলাইনভিত্তিক করা নেই ; তাদের পুনরায় অনলাইনে নিবন্ধন করার বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন প্রাথমিকে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি করা হবে এবং ইউনিক আইডি কার্ড দেওয়া হবে। এই ইউনিক আইডি কার্ড তৈরির জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের তথ্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
যেসব তথ্য দিতে হবে শিক্ষার্থীদের
ইউনিক এ কার্ডে একজন শিক্ষার্থীকে ১৫ ধরনের তথ্য দিতে হবে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীর নাম বাংলা ও ইংরেজিতে, জন্মনিবন্ধন, জন্ম তারিখ, জন্মস্থান,লিঙ্গ, জাতীয়তা, ধর্ম, অধ্যয়নরত শ্রেণি, শ্রেণির রোল নম্বর, বৈবাহিক অবস্থা, প্রতিবন্ধী (প্রযোজ্য হলে), রক্তের গ্রুপ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কি না, ইংরেজিতে মা ও বাবার নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল, পেশাসহ জীবিত না মৃত তাও উল্লেখ করতে হবে। পিতা, মাতা অভিভাবক না হলে অভিভাবকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ও উল্লেখ করতে।
এছাড়াও আরও উল্লেখ করতে হবে, পোস্টকোডসহ শিক্ষার্থীর পূর্ণ ঠিকানা। শিক্ষার্থী যদি সিটি করপোরেশনের মধ্যে বসবাস করে সে ক্ষেত্রে বাসার হোল্ডিং নম্বর, ওয়ার্ড মহল্লা, রাস্তার নাম নম্বর পোস্টঅফিস ও পোস্টকোড নম্বর।
এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর যাবতীয় তথ্য শ্রেণিশিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক প্রত্যয়ন করবেন এবং প্রত্যয়নকারী শিক্ষকের নাম মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর নির্ধারিত ছকে পূরণ করতে হবে। সূত্র:- ঢাকা পোষ্ট
Leave a Reply