দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা দৌলতপুর সবসময়ই কোরবানীর পশুর জন্য সমৃদ্ধ।
তবে করোনা পরিস্থিতি আর চলমান লকডাউনে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এবার দৌলতপুর উপজেলার গরু খামারীরা। ঈদকে সামনে রেখে এ উপজেলায় লালন পালন করা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার গরু আর ছাগল প্রস্তত রয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশী এবং ভেড়া প্রায় ৭’শ ।
আর মাত্র ক’দিন পরে ঈদ কিন্তু এখনও খামারে খামারে শোভা পাচ্ছে কোরবানীর জন্য প্রস্তুত করা পশুগুলো। এখন পর্যন্ত পশু বিক্রয় করতে না পেরে লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।
দৌলতপুর উপজেলায় প্রতিবছর খামারীরা কোরবানীর জন্য বিপুল সংখ্যক গরু ছাগল পালন ও প্রস্তুত করে থাকে। এককালীন ভালো দাম পাওয়ার আশায় খামারীরা পশু প্রস্তুত করলেও এবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে লকডাউন ও করোনা। এতে দুশ্চিন্তার ভাঁজ খামারীদের কপালে।
উপজেলার পার্শ্ববতী চকদৌলতপুর গ্রামের জুবায়ের আহমেদ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গরুর খামার গড়েছেন। উদ্দেশ্য কোরবানীর আগে ভালো দামে বিক্রয় করা। তাই পরম যত্নে লালন পালন করছেন তার খামারে গরুগুলি। কিন্তু চলমান লকডাউন আর করোনার প্রাদুর্ভাব তার সেই স্বপ্ন যেন ফিকে হবার ভয় দেখা দিয়েছে। ফলে তার কপালে পড়েছে দুঃশ্চিন্তার ভাজ।
খামারী জুবায়ের আহমেদ বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ২০টি গরু লালন পালন করেছি। অনলাইনে দু’একটি গরু বিক্রয় করেছি। করোনা ও লকডাউনের কারনে বাঁকী গরুগুলি এখনও পর্যন্ত বিক্রয় করতে পারিনি। লোকসানে পড়ার আশঙ্কা দিন কাটছে আমার। খলিশাকুন্ডি ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের ক্ষুদ্র গরু খামারী আব্দুল মজিদ জানান, কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ৫টি গরু লালন পালন করেছি। ১২ লাখ টাকায় একটি গরু বিক্রয় করতে পারলেও এখনও অবিক্রিত রয়েছে ৪টি গরু। তাই সে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
শুধু আব্দুল মজিদই নন, এমন ছোট বড় অসংখ্য খামারী রয়েছেন লোকসানের আশঙ্কায়, পরম যত্নে লালন পালন ও প্রস্তুত করা তাদের কোরবানীর পশু বিক্রি নিয়ে।
তবে দৌলতপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল মালেক জানান, আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দৌলতপুরে প্রায় ৩ হাজার ২০০ খামারী প্রায় ১৫ হাজার গরু, ১৫ হাজার ছাগল এবং ৬৫৬টি ভেড়া প্রস্তুত করেছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, কোরবানীর পশুর জন্য প্রসিদ্ধ দৌলতপুরের খামারীরা পশু বিক্রি নিয়ে চিন্তিত হলেও খুব একটা সমস্যা হবেনা। ইতোমধ্যে অনেক খামারী অনলাইনে পশু বিক্রয় করে লাভবান হয়েছেন।
করোনার কারনে চলমান লকডাউন ঈদ পর্যন্ত বর্ধিত করা হলে সব চেয়ে বেশী ক্ষতির সন্মুখীন হবে গরু লালন পালনকারী খামারীরা বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply