1. [email protected] : admi2019 :
  2. [email protected] : খুলনা বিভাগ : খুলনা বিভাগ
  3. [email protected] : News : Badol Badol
  4. [email protected] : Mostafa Khan : Mostafa Khan
  5. [email protected] : mahin : mahin khan
শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে যৌতুকের বলি হলেন গৃহবধু মারিয়া

আরিফুর রহমান স্বপন
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১১ আগস্ট, ২০২১
  • ১৪৪ বার পঠিত

লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে মারিয়া আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ওই গৃহবধু উপজেলার ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের বচইড় গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আমান উল্লাহ’র স্ত্রী। স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং দেবর-ননদ মিলে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে বলে ওই গৃহবধু মারিয়ার বাবার অভিযোগ।

এই ঘটনায় বুধবার (১১ আগষ্ট) পুলিশ ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত গৃহবধুর বাবা লাকসাম উপজেলার বেতিহাটি গ্রামের মোর্শেদ আলম মনোহরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

নিহতের স্বামীর বাড়ি সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) দুপুরে ওই গৃহবধুর সঙ্গে স্বামী, শাশুড়ি, ননদ এবং দেবরের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হয়। ঝগড়া-বিবাদের জের ধরেই ওই গৃহবধু বিষপান করে। পরে তাকে প্রথমে মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে তারা কুমিল্লায় এবং অবশেষে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হলে সেখানে  ওই গৃহবধু মৃত্যূ হয়।

নিহত গৃহবধুর বাবার বাড়ীর সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বেতিহাটি গ্রামের মোর্শেদ আলমের একমাত্র মেয়ে মারিয়া আক্তারের সঙ্গে পাশবর্তী মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম (দক্ষিণ) ইউনিয়নের বচইড় গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আমান উল্লাহ’র বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি দেবর-ননদসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন প্রায় সময় মারিয়ার পরিবারের কাছে বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ব্যবসার জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছে। এতে ওই গৃহবধুর পরিবার এসব দাবি পূরন করতে অস্বীকৃতি জানালে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নানা অজুহাতে গৃহবধুকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম নির্যাতন করতো। মঙ্গলবার (১০ আগষ্ট) ওই নির্যাতনের বলি হয়েছে গৃহবধু মারিয়া।

নিহত মারিয়ার মা ফাহিমা আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার মেয়েকে নানা অজুহাতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম নির্যাতন করতো।

তিনি জানান, ঘটনারদিন রাত অনুমান সাড়ে ৮ টার দিকে মারিয়ার স্বামী আমান উল্লাহ জানায়, মারিয়া খুব অসুস্থ। কি যেন খেয়েছে। সম্ভবত বিষ খেয়েছে। আমি তাকে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে এনেছি। এর কিছুক্ষণ পর আমি মারিয়ার অবস্থা জানতে চাইলে সে (স্বামী) জানায় তাকে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছি। একপর্যায়ে রাত অনুমান পৌনে দুইটার দিকে জানতে পারি আমার মেয়ে মারা গেছে। নিহত মারিয়ার এক বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

মারিয়ার মা আরও জানান, তার মেয়ের ওপর নির্যাতনের কারণে গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন শামীমসহ গণ্যমান্য বক্তিবর্গের মধ্যস্থতার একাধিক সালিশ-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার (৫ আগষ্ট) আমার মেয়েকে তার স্বামী আমান উল্লাহ আমাদের বাড়ি থেকে তার বাড়ি (বচইড়) নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এসব বিষয়ে তিনি গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন শামীমকে অবহিত করা হয়েছে। নিহত মারিয়ার বাবা-মায়ের দাবি তাঁদের মেয়েকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে।

এই ব্যাপারে মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহাবুল কবির জানান, নিহত ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..