কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
টানাবৃষ্টিতে কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি, বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনের ফলে ইতোমধ্যে কুষ্টিয়া মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার বেশ কিছু ফসলি জমি ও বসতবাড়ী বিলীন হয়েছে নদীগর্ভে। ভাঙ্গনের মুখে ইউনিয়নের কয়েক একক জমি, বাড়ী-ঘর, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা। আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদীর তীরবর্তী ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের।
নদী ভাঙনে ভিটামাটি হারা পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তালবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জানান, তালবাড়ীয়া মোবারক বাঁধের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩ কিলোমিটার বেশি ঝুকিপূর্ণ। নদীর অব্যাহত ভাঙনে এই ইউনিয়নের প্রায় কয়েকশ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়দের বাড়ীতে গিয়ে উঠেছে। ক্রমাগত ভাঙনে প্রায় কয়েক হাজার একর ফসলি জমি, ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ৬টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পথে।
তিনি জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর বছর নদী ভাঙনের তীব্রতা অনেক বেশি, প্রতিদিনই ফসলি জমিসহ বসতবাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে তীরবর্তী এলাকা ভেঙে ইউনিয়নের মূল ভূখন্ডের আয়তন ক্রমেই কমছে।
এবিষয়ে মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুল আরেফিন বলেন, দ্রুত ভাঙনরোধ না করা গেলতে পারে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের এক মাত্র কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কটি। নদীর পানিতে প্লাবিত হতে পারে কুষ্টিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার অধিকাংশ অঞ্চল।
তিনি জানান, গত দুই বছর আগে ৯শ কোটি টাকার একটি (ডিপিডি) প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে ওই তালবাড়ীয়া ইউনিয়নসহ কুষ্টিয়া জেলা এবং আশপাশের কয়েকটি জেলা।
এছাড়াও রক্ষা পাবে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের এক মাত্র কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কটি।
ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল হেমিক জানান, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলের কারণে দেশের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। পদ্মা ও গড়াই নদীতে পানি বাড়ার কারণে মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদী ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুতই জিও ব্যাগের মাধমে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply