নিজস্ব প্রতিবেদক
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে ধর্ম অবমাননার ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দায়ী ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই ব্যক্তির নাম ইকবাল হোসেন (৩৫)। বুধবার রাতে জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাকে গ্রেফতার করতে পারলেই মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত ওই যুবক কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার নূর আহাম্মদ আলমের ছেলে ইকবাল হোসেন এবং সে বিভিন্ন মাজারে ও যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো (ভবঘুরে) হিসেবে পরিচিত।
তবে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, যেই যুবক পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছে তাকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে এখনই তিনি সাংবাদিকদের নিকট ওই যুবকের নাম বলতে চান না।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার নানুয়া দীঘির উত্তর পাড়ে নির্মিত সেই পূজামণ্ডপে গত ১৩ অক্টোবর ইকবাল হোসেন নামের এক যুবক পবিত্র কোরআন শরীফ রেখেছিলেন। ঘটনাস্থলের আশপাশের সড়ক ও বাড়িগুলোর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে ওই যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার আগের দিন রাত ২টা ১০ মিনিটে কুমিল্লার দারোগাবাড়ির মসজিদ থেকে কিছু একটা হাতে নিয়ে বের হন এক যুবক। এর ঘণ্টাখানেক পর নানুয়াদীঘি অস্থায়ী মণ্ডপের উত্তর-পূর্বদিকের রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় ওই একই ব্যক্তিকে। এ সময় তার কাঁধে ছিল হনুমানের হাতে থাকা গদা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে সেই যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রটি জানিয়েছে। পুলিশ ও পূজামণ্ডপ সংশ্লিষ্টদের ধারণা, রাত ২টার পর থেকে থেকে ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করেন ওই ব্যক্তি।
এদিকে বুধবার রাতে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, সিসি টিভি ফুটেজের ওই যুবককে ধরতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার বেশ কয়েকটি টিম অভিযান পরিচালনা করছে। শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার তিনি বিস্তারিত জানাবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদিকে অস্থায়ী সেই পূজা মণ্ডপটি একটি মাজারের পাশে অবস্থিত হওয়ায় মাজার থেকেই কেউ ঘটনাটি ঘটিয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এ বিষয়ে মাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পূজামণ্ডপে যে ধরনের কোরআন শরীফ দেখা গেছে, সে ধরনের কোনো কোরআন শরীফ মসজিদ বা মাজারে নেই। পাশাপাশি মসজিদ এবং মাজারের সব কিছু সিসিটিভি নিয়ন্ত্রিত। মাজার থেকে এমন ঘটার কোনো সুযোগ নেই। তারা যদি এ ধরনের কোনো তথ্য পান, তবে তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর সকালে নগরীর নানুয়া দীঘির উত্তর পাড় এলাকার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার খবরে নগরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং এ ঘটনায় জেলার বিভিন্ন স্থানে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানায় ৫টি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি ও দাউদকান্দি মডেল থানায় একটিসহ মোট ৮টি মামলা হয়।
Leave a Reply