নিজস্ব প্রতিবেদক
তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নরসিংদীর বিভিন্ন ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবিদ্ধসহ ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আরিফ মিয়া (২৮) নামে এক সিএনজি চালক নিহত হয়েছে এবং গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩২ জন।
নিহত আরিফ মিয়া শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের জানেরটেক গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। সে পুলিশের ভাড়া করা একটি সিএনজির চালক ছিলেন।
রবিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার করিমপুর, নজরপুর, চিনিশপুর এবং রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দির বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও রায়পুরা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়াও কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,, সদর উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের শ্রীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম কিবরিয়াকে অবরুদ্ধ করে নৌকার প্রার্থী মুমিনুর রহমান আপেলের সমর্থকরা। এর জেরে দুপুর ১২টার দিকে নৌকার প্রার্থী আপেল করিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে তাকে অবরুদ্ধ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা। এ ঘটনায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রায় ৮/১০ জন আহত হয়।
এদিকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে চিনিশপুর ইউনিয়নের চিনিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সহকারী উপ পরিদর্শক মো. সাঈদ আনোয়ার ও মেম্বার পদপ্রার্থী সায়েম ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আহত হয়। এ সময় পুলিশ ৪টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে।
এ ছাড়া নজরপুর, আমদিয়া ইউনিয়নে বিক্ষিপ্তভাবে ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় মোট ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়াও কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে সদর উপজেলার আমদিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (আনারস প্রতীক) নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া রিপন, কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জহিরুল ইসলাম হিরন মোল্লা ও করিমপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া ভোট বর্জন করার ঘোষণা দেন।
এদিকে সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ধাইরেরপাড় ৫নং কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে পরাজিত এক মেম্বার প্রার্থীর ছেলে ও তার সমর্থকরা ফলাফল প্রত্যাখান করে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। এসময় তাদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে সিএনজি চালক আরিফ ও শাহিনুর ইসলাম নামে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ ১২ জন আহত হয়। হামলা চলাকালীন সময়ে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে প্রায় ১৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়েন । পরে আহত অবস্থায় সিএনজি চালক ও পুলিশ কনস্টেবলকে উদ্ধার করে রায়পুরা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিএনজি চালক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন।
নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হারুনুর রশীদ বলেন, মাথায় ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর তিনি এখন সুস্থ্য আছেন। এদিকে সবখানেই পর্যাপ্ত পুলিশ রয়েছে।
Leave a Reply