1. [email protected] : admi2019 :
  2. [email protected] : খুলনা বিভাগ : খুলনা বিভাগ
  3. [email protected] : News : Badol Badol
  4. [email protected] : Mostafa Khan : Mostafa Khan
  5. [email protected] : mahin : mahin khan
শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৫১ অপরাহ্ন

বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত ভেজাল আখের গুড়ে সয়লাব নরসিংদীর হাট-বাজার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২
  • ৩০৩ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

“আমি নরসিংদী কোর্টের এপিপি মীর মোক্তার হোসেন। আমি কোন সাংবাদিক টাংবাদিক লইনা! আপনারা কার অনুমতি নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করেছেন ? আমার কারখানায় আমি যা খুশি তাই তৈরি করব তাতে আপনাদের কি? আমি ভেজাল গুড় তৈরি করলে কি আপনাদের কৈফিয়ত দিতে হবে ? আপনারা পারলে নিউজ করে আমার উল্টাইয়েন। ভবিষ্যতে তার কারখানায় সাংবাদিকতা করতে আসলে খবর আছে।” সাংবাদিকদের এভাবেই হুমকি দিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নরসিংদীর ভাগদী কাঠবাগান এলাকার ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা মালিক ও নরসিংদী কোর্টের আইনজীবী এপিপি মীর মোক্তার হোসেন।

পবিত্র মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভেজাল আখের গুড়ে সয়লাব হয়ে গেছে নরসিংদীর বিভিন্ন হাট-বাজার। কিছু অসাধু ব্যবসায়ি এ রমজান মাসকে কেন্দ্র করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় চিনি, রাব, চুন, রং ও ক্যামিকেল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরিতে মত্ত হয়ে উঠেছে। ঈদে পিঠা-পায়েস ও সুস্বাদু খাবার তৈরীতে অনেকেই আখের গুড় ব্যাবহার করে থাকে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেনীর অতিলোভী মুনাফাখোর ব্যাবসায়ী তৈরী করছে বিষাক্ত রং ও ক্যামিকেল মিশ্রিত ভেজাল আখের গুড়। আর এসকল নকল আখের গুড় ছড়িয়ে দিচ্ছে নরসিংদী শহর সহ আশেপাশের হাটবাজারগুলোতে। সরকারের পক্ষ থেকে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফায়দা হাসিল করে নিচ্ছে। এদেশের সকল খাবারেই ভেজাল! এ যেন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে! এসকল ভেজাল খাবারের ফাঁদে পড়ে ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক, লিভার সিরোসিস ও কিডনী ড্যামেজসহ বিভিন্ন মরণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে এদেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ! ভেজাল নিয়ন্ত্রণে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন নরসিংদীর সর্বস্তরের সচেতন মহল। তেমনি এক ভেজাল গুড় তৈরির কারখানার সন্ধান মিলেছে নরসিংদীর ভাগদী (কাঠবাগান) এলাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কারখানাটি নরসিংদী কোর্টের আইনজীবী এপিপি মীর মোক্তার হোসেন’ ও বাদল হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে যৌথ মালিকানায় পরিচালনা করে আসছেন।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে নরসিংদী কোর্টের আইনজীবী এপিপি মীর মোক্তার হোসেন ও বাদল হাওলাদার এর যৌথ মালিকানাধীন ভেজাল গুড় তৈরির কারখানায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিশাল কারখানার সামনের ফটকে বাহির থেকে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ভেতরে কর্মচারীরা গুড় তৈরিতে ব্যাস্ত সময় পার করছে। গুড়ের পাইকারি ক্রেতা পরিচয় দিয়ে ভেতরে যেতে চাইলে ভেতর থেকে এক মহিলা চাবি দিয়ে তালা খুলে কারখানায় প্রবেশ করতে বলেন। তালা খুলে ভিতরে গিয়ে দেখা যায় বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে কর্মচারীদের মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে দিবা-রাত বিরামহীনভাবে তৈরি করা হচ্ছে নকল আখের গুড়। একপাশে চিনির বস্তার সারি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। অন্য পাশে মজুদ করে রাখা হয়েছে ভেজাল গুড় তৈরির উপকরণ (গো খাদ্য) রাব, রং ও চুন। সেখান থেকে একটি বড় পাতিলে চিনি ও রং মিশিয়ে উনুনে জাল দিয়ে বড় বড় হারিতে নামিয়ে রাখা হচ্ছে। পরে বিভিন্ন ক্যামিকেল ও রং মিশিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ভেজাল আখের গুড়। আরেকপাশে বাজারজাত করার জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে কোবরা সুপার ফুল পিঠার গুড় ও হাওলাদার সুপার আখের গুড়ের মোড়কে মোড়ানো টিনের কৌটায় মজুদ করা আখের গুড়। এসব ভেজাল গুড় তৈরির লাইসেন্স, বিএসটিআই সনদ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দেখতে চাইলে তারা কিছুই দেখাতে পারে নি।

কারখানার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মচারী বলেন, অরিজিনাল গুড় স্বাদে একটু নুনতা হয় তাই অরিজিনাল গুড় কেউ কিনতে চায় না। আমাদের তৈরী করা গুড় স্বাদে, গন্ধে অতুলনীয়। এর নজরকাড়া রং এবং দাম হাতের নাগালে থাকায় এর গ্রাহক চাহিদা ব্যাপক। চিনি ও ক্যামিকেলের মিশ্রনের সাথে ফানটা রং মিশিয়ে এর আকর্ষণ বাড়িয়ে তোলা হয়। ফলে এ আখের গুড়ে ক্রেতারা খুব সহজেই আকৃষ্ট হয়। বাজারে এ গুড়ের চাহিদা ব্যাপক থাকায় প্রতিদিন নরসিংদী জেলা সহ এর আশপাশের এলাকার পাইকাররা এসে এখান থেকে পাইকারি গুড় কিনে নিয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী বলেন, ইতিপূর্বে ও বহু পত্রিকা ও টিভিতে তার ভেজাল গুড় তৈরির কারখানা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে। সে ভ্রাম্যমান আদালতের সদস্যদের সাথে ও অসদাচরণ করেছে। ফলে জনসমক্ষে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ জরিমানা গুনতে হয়েছে তবুও সে শোধরায়নি। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে নকল গুড় তৈরি হলেও প্রশাসন এব্যাপারে বরাবরই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। এসকল ভেজাল গুড় সহ সকল ধরনের ভেজাল নিয়ন্ত্রণে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..