নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীর রায়পুরার কোহিনুর জুট মিল হাইস্কুল ঘাগটিয়া বিদ্যালয় ও প্রধান শিক্ষক কে নিয়ে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
রবিবার সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি আতিকুর রহমান, প্রধান শিক্ষক-কোহিনূর জুট মিল হাই স্কুল ঘাগটিয়া, রায়পুরা, নরসিংদী। কোহিনূর জুট মিল হাই স্কুল ঘাগটিয়া ও এর শিক্ষকদের হয়রানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত অপপ্রচারের প্রতিবাদে আজ সংবাদ সম্মেলন।
১৯৮১ সালে শুধু জুট মিলের শ্রমিক ও কমকর্তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষালাভে স্কুলটির পাঠদান কার্যকম শুরু হয়। কোহিনূর জুট মিলের শ্রমিক নেতাদের আধিপত্য নিয়ে দন্ধ ও খুন খারাপি হলে মিলটি তালা বদ্ধ হয়। উক্ত স্কুলের শিক্ষকরা পরবর্তীতে রেলওয়ের জায়গার উপর শ্রমিকদের জন্য নির্মিত কলোনিতে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু করেন। বিদ্যালয়ের জন্য সরকারি নিয়ম মোতাবেক জমির দলিল সম্পাদন না করেই বিএনপি সরকারের আমলে অথাৎ ১৯৯৫ ইং সালে বিদ্যালয়টি জুনিয়র স্কুল হিসেবে এমপিও ভুক্তি হয়। ১৯৯৮ ইং সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। ২০০১ সালে শেষের দিকে আমি আতিকুর রহমান বিধি মোতাবেক সহকারি শিক্ষক বাংলা এবং আমার ভাই আহসান হাব্বি ২০০৩ সালে সহকারী শিক্ষক সমাজ-বিজ্ঞান হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়।
২০০৩ সালে পুনরায় উক্ত জুট মিলে শ্রমিক নেতাদের দন্ধের কারণে এলাকায় দুইটি খুন হলে গৌরিপুর এলাকার কিছু বখাটে, সন্ত্রাসী লোক চাদাঁবাজি কার্যক্রম শুরু করিলে তাহাদের অত্যাচারে অগ্রণী ব্যাংকের একটি শাখা গৌরিপুর থেকে মুছাপুরে চলে যায়। তাহারা প্রধান শিক্ষক জনাব আবু মোহাম্মদ সাহেব সহ আমাদের নিকট চাদাঁ দাবি করে। প্রধান শিক্ষক সাহেব বিষয়টি কতৃপক্ষকে জানান। এই দিকে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে বিদ্যালয়ের নামে রেজিষ্ট্রীকৃত মূল দলিল চেয়ে পত্র প্রেরণ করেন। প্রধান শিক্ষক জমির দলিল নেই বলে জানান এবং ঐ সময়কার সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে কতৃপক্ষকে আবেদন করিলে ২০০৬ সালের শেষের দিকে বিদ্যালয়টিকে গৌরিপুর থেকে ঘাগটিয়া গ্রামে শিক্ষা বিভাগের নামে বেতলব ভাবে রের্কড ভুক্ত ভাবে ১২৩ শতাংশ পতিত জায়গায় স্থানান্তর করেন।
২০০৭ সাল থেকে কোহিনূর জুট মিল হাই স্কুল ঘাগটিয়া যথাযথ সরকারি দপ্তরের অনুমতি ও মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়ে আসছে। এখানে স¤পূর্ণ বিনা বেতনে সকল ছাত্র ছাত্রীদের পাঠদান করা হয়। যদিও অবকাঠামোগত দিক দিয়ে কিছু জটিলতার কারণে আমরা পিছিয়ে আছি কিন্তু পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল যথেষ্ট ভালো প্রতি বছরই ফলাফলের দিক থেকে বিদ্যালয়টি উপজেলায় ২য় স্থান লাভ করে আসছে। আমাদের স্কুলের সফলতায় ইশশারন্বিত হয়ে কিছু মহল আমাদের বিদ্যালয় ও আমরা শিক্ষকদের নামে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো শুরু করেছে। কিছুদিন আগে আমার বিরুদ্ধে একটি মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হয়েছে আমি নাকি ৬৫০ জন শিক্ষার্থীকে এসএসসি পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে পাশ করানোর দায়িত্ব নিয়েছি। এখন আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কি এতটায় দুর্নীতিগ্রস্থ যে পাবলিক পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে পাশ করানো যায়? এতেই কি প্রমাণিত হয় না যে, আমাকে হয়রানি করার জন্য এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে? তাছাড়া আরও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে – আমরা নাকি বিদ্যালয়ের জমিটি ভাড়া নিয়েছি? আপনাদের মাধ্যমে আমি বিদ্যালয়ের জমি ক্রয়ের দলিল দেখাতে চাই। তাহারা নয় বোন জমিটি তাহাদের চাচাতো বোন জামাই হাজী আলাউদ্দিন মিয়ার কাছে ২০০৩ সালে বিক্রি করে দিয়েছেন। অথচ স্বাধীনতা যুদ্ধে তথা মুক্তিযোদ্ধে বিরোধী ভূমিকায় লিপ্ত ব্যক্তি মরহুম আবুল হাশেমের বড় কন্যা জাহানারা বেগম (পারুল) শিক্ষা বিভাগের রেকর্ড ভুক্ত ১২৩ শতাংশ পতিত জায়গা সংল্গন ১৪ শতাংশ ভূমিতে বিদ্যালয়ের স্থাপনা করার জন্য অনুমতি দেন। তিনি ৮ গন্ডা জমির বিক্রিবাবদ ৬ লক্ষ টাকা নেন এবং ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিনি আজিবন দাতা সদস্যসহ তাহার বাবার নামে ভবন দেওয়ার আবদার রাখেন কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় আদালতে উক্ত জায়গার বিষয়ে প্রিয়েমশন মামলার রায় আছে। আদালতের মামলায় আবুল হাশেমের কন্যাগণ হেরে যাওয়ায় উক্ত জায়গাটি জাহানারা বেগম (পারুল) দলিল করে দিতে পারে নাই।
২০০৭ সাল থেকে আমি আতিকুর রহমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে এবং পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করিতেছি। উক্ত স্কুলের বিষয়টি সম্মানিত এসিল্যান্ড, ইউএনও, জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের সকলেই অবগত আছেন। আমাদের প্রতিপক্ষ এটাও প্রচার করছে যে, সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্ধ্যে আমরা কোহিনূর জুট মিল হাই স্কুল গৌরীপুর থেকে আলাদা হয়ে বিদ্যালয়ের গোপন পিন নম্বর ব্যবহার করে নতুন করে প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি এবং টাকা উঠিয়ে নিয়েছি যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের জাজমেন্ট আদেশসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি ঘাগটিয়ায় স্কুলটি পরিচালনা করে আসছি। বিনা বেতনে এলাকার ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়া করাতে গিয়ে স্কুল পরিচালনা ও শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার জন্য আমি আমার বাবার জমি পর্যন্ত বিক্রি করেছি। বিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ বিধিবর্হিভূত ভাবে নিয়োজিত শিক্ষক আছমা বেগম ও মোঃ আবদুল মালেক যাদের নিয়োগ কালীন পত্রিকার বিপ্ততি, কমিটির রেজুলেশন ও ফলাফল শীট নেই তাহাদের বিরোদ্ধে শিক্ষামন্ত্রনালের অডিট আপত্তিসহ বেতন ফেরতের নিদের্শ রয়েছে। এই দুই শিক্ষক অবৈভাবে নিয়োজিত থাকার জন্য একটি র্স্বাথান্বেষি মহলের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়ায় কোহিনূর জুট মিল হাই স্কুল ঘাগটিয়া ও এর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হয়রানির উদ্দেশ্যে অপপ্রচার ও মিথ্যাচার চালাচ্ছে। আমি সকল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
Leave a Reply