স্বাভাবিক নিয়মে ঈদ উপলক্ষে চাল, ডাল, সেমাই, চিনি কিংবা শাড়ি লুঙ্গি উপহার দেওয়া হয়। কিন্তু রায়পুরায় এবার ঈদের উপহার হিসেবে দেয়া হচ্ছে জমিসহ সেমি পাকা ঘর। যার মূল্য প্রায় ৩ লাখ টাকা। এবারের ঈদুল ফিতরে একেবারে নিঃস্ব ও ভূমিহীনদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে দেয়া হবে এসব ঘর।
আসছে ২৬ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এই উপহার তুলে দেয়া হবে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার সৌভাগ্যবান ২০ জনকে। ওইদিন গণভবন থেকে ভার্চুুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের মাঝে এই উপহার তুলে দিবেন।
খোঁজ নিতে সরেজমিনে উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের চানপুর পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পের স্থান জুড়ে ঘর নির্মাণ কাজের শেষ মুহূর্তের তোড়জোড় চলছে। ঘরগুলোকে উপকারভোগীদের বসবাসের উপযোগী করে তুলতে অবশিষ্ট কাজগুলো শেষ করা হচ্ছে। এতে সেখানকার বাসিন্দাদের মাঝেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকা ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা গৃহহীন ২০ পরিবার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তাদের মাথা গুজার ঠাই হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের চানপুর পাড়া এলাকায় ৫১ শতক জমির উপর গড়ে তোলা হচ্ছে “চরসুবুদ্ধি আশ্রয়ণ প্রকল্প”। নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষদের অগ্রাধিকার দিয়ে এ প্রকল্পের জন্য ২০জন উপকারভোগী নির্বাচন করা হয়। প্রত্যেক উপকারভোগী ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পাচ্ছেন দুই শতাংশ জমি, প্রায় ২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৫শ টাকা ব্যয়ের নির্মিত একটি সেমি পাকা ঘর। সেই সাথে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ, সন্তানদের জন্য শিক্ষা সুবিদা, বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কাজের প্রশিক্ষণ (যেমন: সেলাই কাজ, কৃষি প্রশিক্ষণ, ফুড প্রসেসিং ইত্যাদি)।
ঘর পাওয়ার সুবিধাভোগীর তালিকায় থাকা শাজাহান, মনোয়ারা বেগম, লাল মিয়া, রেখা আক্তারসহ অনেকে বলেন, আমরা অন্যের বাড়িতে থেকে কাজ করে দিনাতীপাত করতাম। মাথাগুজার ঠাই ছিলনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে মাথা গোঁজার ঠাঁই হতে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের পক্ষ থেকে প্রাণভরে দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা যেন থাকে সুস্থ রাখেন এবং ভালো রাখেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজগর হোসেন বলেন, উপজেলার ২০টি ভূমিহীন পরিবারকে চরসুবুদ্ধি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুণর্বাসন করা হচ্ছে। এই ২০টি পরিবারের জন্য এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার। এর মাধ্যমে ২০ টি পরিবার পাবে নতুন ঠিকানা এবং বদলে যাবে তাদের জীবন। মূলত নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষদের অগ্রাধিকার দিয়ে উপকারভোগী নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে পুণর্বাসিত পরিবারগুলো একসাথে জমিসহ গৃহ, বিদ্যুৎ সুবিধা, সুপেয় পানির সুবিধা এবং শিক্ষা সুবিধা সহ সকল নাগরিক সুবিধা পাবেন এবং গৃহ সমূহ নির্মাণে কঠোর মনিটরিং এর মাধ্যমে সকল ধরনের গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই উপকারভোগীর অনুকূলে জমির কবুলিয়ত দলিলসহ নামজারি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। ২৬ এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মাধ্যমে তাদের কাছে সবকিছু হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশে ভূমিহীনদের নিজস্ব ঠিকানা করে দেয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নতুন করে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। গত বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে এখন চলছে এ প্রকল্পের ৩য় পর্যায়ের কাজ।
Leave a Reply