বিশ্বজুড়ে আঘাত হেনেছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস। মাত্র কিছূ দিনের ব্যবধানে নিরব-নিথর করে দিয়েছে প্রাণচঞ্চল সমস্ত পৃথিবীটাকে। শিশু থেকে বৃদ্ধা, রাস্তায় পড়ে থাকা নিম্নস্তরের মানুষ থেকে রাস্ট্রপ্রধান পর্যন্ত কেউ রেহাই পাচ্ছে না করোনার থাবা থেকে। কোন ব্যক্তি শরীরে করোনা শনাক্ত হলে বা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার পাশে কাউকে পাওয়া যায় না।
প্রতিবেশী বা আত্নীয় স্বজনদের কথা না হয় বাদই দিলাম। করোনায় মৃত মানুষটির পরিবারের মা, বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী সন্তান তারাও নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করতে দেখা গেছে। কেউ কেউ কাছে আসতে চাইলেও নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সচেতন মহল তাদেরকে কাছে আসতে দেয় না। এমতবস্থায় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি পাশে প্রথমে দাড়ায় স্থানীয় প্রশাসন, তারপর ডাক্তার এবং পরিশেষে কবর পর্যন্ত যাদের উপস্থিতি তারা হচ্ছে পুলিশ সদস্য।
পুলিশ শব্দটি একসময় আমজনতার কাছে ভয়ের ছিল। গত একদশক থেকে বাংলাদেশ পুলিশের আন্তরিকতায় এই ভয় তারা জয় করে নিয়েছেন। বন্ধুর ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা সাধারণ জনতার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে কারো মৃত্যু হলে – সকলে লাশ কাঁধে না নিলেও পুলিশ কাঁধে নিয়ে জানাজা দেয়। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, পুলিশই জনগণের প্রকৃত বন্ধু এবং ভরসাস্থল। বাবা, মা, ভাই বোন স্ত্রী সন্তান এর চেয়ে আপন জনই পুলিশ। করোনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করলো “জিতে গেলো পুলিশ, হেরে গেলাম আমরা”।
এছাড়াও করোনাকে ঘিরে পুলিশের ভালো কাজগুলোর মধ্যে আরো একটা তুলে ধরছি সেটি হলো: দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে হতদরিদ্রদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। নরসিংদীর রায়পুরা থানা পুলিশের পক্ষ হইতে ১০ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিম্নআয়ের সহস্রাধিক হতদরিদ্র মানুষকে চাল, ডাল, তৈল, লবন, পিয়াজ, আলু সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দিয়ে পাশে দাড়িয়েছেন। রায়পুরা থানার ওসি মহসিনুল কাদির তার পরিচিতজন, শিল্পপতি/বিত্তবানদের কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী চেয়ে এনে রায়পুরা উপজেলার অসহায়দের মাঝে বিলি করছেন। সামনের দিনগুলোতেও তার সাধ্যানুযায়ী সাহায্যের হাত অব্যহত থাকবে বলে জানান ওসি মহসিনুল কাদির। যা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।
তাই আমি বলবো পুলিশের ছোটখাটো ভুলগুলো বড় করে না দেখে তাদের ভালো ও মহৎ কাজগুলোর প্রশংসা করি। একটা কথা মনে রাখতে হবে, দুর্দিনে যাদেরকে পাশে পাওয়া যায় তারাই প্রকৃত বন্ধু।
………………………
সাংবাদিক মো. মোস্তফা খান
ম্যানেজিং ডিরেক্টর: জোনাকী টিভি
রিপোর্টার: দৈনিক ইত্তেফাক
Leave a Reply