ডেস্ক রির্পোট
করোনাভাইরাসে দেশে নিত্য বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্তের রেকর্ড। এর মধ্যে শনাক্তের সংখ্যা ৪ হাজার ১৯ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যূবরণ করেছে ৩৮ জন। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৯২৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৭০টি ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৭টি। নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৬২টি। এতে একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল (১ জুলাই) একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬টি নমুনা পরীক্ষার কথা জানানো হয়েছিল। এতে ৩ হাজার ৬৮২ জন শনাক্ত হন। এর আগে গত ২৯ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ। উৎসস্থল চীনকে ছাড়িয়েছে এ তিনটি দেশই। দেশে ইতোমধ্যে শনাক্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত ৮ লাখ ২ হাজার ৬৯৭ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কানাডাকে পেছনে ফেলে ১৭তম। আর এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর আগে রয়েছে ভারত, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যূবরণ করেছেন ৩৮ জন। এর আগে গত ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু সংখা দাঁড়াল ১ হাজার ৯২৬ জনে। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩২ ও নারী ৬ জন।
দেশে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতিদিনই সুস্থ হয়ে উঠছেন বিপুল মানুষ।
নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতাল মিলিয়ে নতুন সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন। এ নিয়ে মোট ৬৬ হাজার ৪৪২ জন সুস্থ হয়েছেন। এ হিসেবে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত আছেন ৮৬ হাজার ৮৩৫ জন।
ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে। তবে, এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার প্রতি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।
ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। এখন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিত্তিক লকডাউন চলছে। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।
জোনাকী টেলিভিশন/এসএইচআর/২ জুলাই ২০২০ইং
Leave a Reply