আবুল কাশেম,চরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি
নরসিংদীর আলোকবালীর মুক্তিযোদ্ধা মাদবর আলীকে অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের সাতপাড়ার সর্বশেষ সম্বল বসতবাড়ীটিও ইতোমধ্যে তার চিকিৎসার ব্যয়বহন করতে বিক্রি করা হয়েছে। বর্তমানে অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেনা তার পরিবার। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে,মাদবর আলী নরসিংদী জেলার ৩২৩ নং তালিকা ভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ব্রেনস্ট্রোক করলে মুক্তিযোদ্ধা মাদবর আলীকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাবার পরামর্শ দিয়েও সেখানে নিয়ে চিকিৎসা করানোর মত প্রয়োজনী অর্থ পরিবারের লোকদের কাছে নেই। ফলে উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মাদবর আলী দিনদিন আরও বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
মুক্তিযোদ্ধা মাদবর আলীর ছেলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, দিনে আনি দিনে খাই। আমাদের শেষ সম্বল বসত বাড়ীটি ইতোমধ্যে সামান্য টাকায় বিক্রি করে ওনার চিকিৎসায় ব্যয় করেছি। ডাক্তার জানিয়েছে ওনার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমরা এতো টাকা কই পাবো।’
নাসির আরও বলেন, আমার বাবা দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, দেশের মানুষের জন্য আন্দোলন, সংগ্রাম করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার বর্তমানে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায়। আমরা আমাদের বাবার উন্নত চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এব্যাপোরে আলোকবালী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ মুক্তিযোদ্ধা মাদবর আলীর অসুস্থতের বিষয়টি আমি জানি। তার ছেলে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমাদের হাতে ঠান্ডা, কাশি, জ্বরের বাহিরে চিকিৎসা করানোর ক্ষমতা নেই। আমি সান্ত্বনা দেয়ার বাহিরে কিছুই করতে পারবো না।
অপর ছেলে ইসমাইল মিয়া বলেন, গত ৪ দিন ধরে হাসপাতালে আছি। দিন দিন ওনার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। বাবা উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তার বলেছেন কিন্তু খরচ মিটানোর মত টাকা আমাদের নেই। তাই বাড়িতে ফেরত নিতে হচ্ছে। আমাদের কিছুই করার সুযোগ নেই।
এব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড লীগের নরসিংদী জেলা সভাপতি মনসুর আলী বলেন ‘আমরা বিষয়টি অবগত নয়। পরিবারের সাথে দেখা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো’।
নরসিংদী সদরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তছলিমা আক্তার বলেন ‘ আমরা বিষয়টি অবগত নয় এবং সাহায্যের জন্য কেউ আবেদনও করেন নি। যাই হোক, উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে পাঠাচ্ছি, তারা খোজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে।
Leave a Reply