নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে চালু বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং অত্যাধুনিক ফ্লাওয়ার মিল। দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন নারায়ণগঞ্জের সিটি ইকোনোমিক জোনে স্থাপন করা হয়েছে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এই কারখানা। যেখানে কোন রকম হাতের স্পর্শ ছাড়াই কাঁচামাল থেকে পণ্য উৎপাদন ও গাড়িতে বোঝাই করা হয়।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার ভেতরে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে দেশের ৬ষ্ঠ বেসরকারি ‘সিটি ইকোনোমিক জোনে’র যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের এপ্রিলে।
উদ্বোধনের দুই বছর না পেরুতেই এই ইকোনোমিক জোনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্বয়ংক্রিয় ফ্লাওয়ার মিল চালু করল ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারী অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী সিটি গ্রুপ।
কর্তৃপক্ষ জানায়, অত্যাধুনিক এই কারখানার যাবতীয় যন্ত্রাংশ আনা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান বুলার থেকে। এখানে গম থেকে পাথর কিংবা লোহাজাতীয় উপাদান আলাদা করা হয় স্বয়ংক্রিয় মেশিনে। গমের চেয়ে বড় কিংবা ছোট দানা বাছাই করতে রয়েছে ভেগা সেপারেটর মেশিন। গমে ভুট্টা, সয়াবিন, ডাবলির মিশ্রণ শনাক্ত করছে ৩০টি ক্যামেরা সম্বলিত কালার সটার। গমের পুষ্টিগুণ পরিমাপের জন্য রয়েছে এনআইআর মেশিন। হাতের স্পর্শ ছাড়া এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরই ক্রাশিংয়ে পাঠানো হয় গম।
সিটি গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই আমাদের দেশের জনগণের কাছে সবচেয়ে ভালো এবং উন্নত মানের পণ্যটাই পৌঁছাতে। ভালো পণ্য জনগণের হাতে পৌঁছাতে আমরা চেষ্টা করছি এবং চেষ্টা করে যাব।’
কারখানাটি পরিদর্শনে গিয়ে মুগ্ধ হন অতিথিরা। কারখানার ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য রয়েছে অটোমেশন হাউজ কিপিং সিস্টেম। মেঝেতে ময়লা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেনে নেবে এই মেশিন।
কারখানা পরিদর্শনে আসা স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বলেন, ‘এর মধ্য দিয়ে নতুন এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন হবে, দেশের মানুষ সাশ্রয়ী মূল্যে ময়দা পাবে।’
এইচএসবিসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উর রহমান বলেন, ‘সিটি গ্রুপের সঙ্গে এইচএসবিসি ব্যাংকের সম্পর্ক ২০ বছরেরও অধিক। এই বিশ বছরে তাদের কোনো পাওনা পরিশোধে একদিন দেরি দেখিনি। আশা করি তারা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’
সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আজকে ১০০ ইকোনোমিক জোন বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন হবে। কর্মসংস্থান হবে, শিল্প নগরী গড়ে তুলবে। এর একটি অংশে আমরা আছি।’
করোনাকালে বড় বিনিয়োগের জন্য সিটি গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান বেজার চেয়ারম্যান এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘৪১ সালে বাংলাদেশ যে উন্নত বিশ্বে যাবে, সেই ৪১ সালে এগিয়ে যাবার জন্য এগুলোই পাথেয়।’
৭৮ একর জায়গায় স্থাপিত সিটি ইকোনোমিক জোনে ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা, সুজি বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।
করোনাকালে এ কারখানায় কাজের সুযোগ পেয়েছেন প্রায় দেড় হাজার কর্মী। এই ফ্লাওয়ার মিলের দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা পাঁচ হাজার টন আটা, ময়দা, সুজি। কারখানাটিতে অন্তত ৬শ’ নারী কর্মী কাজের সুযোগ পাচ্ছে বলে জানিয়েছে সিটি গ্রুপ।
Leave a Reply