নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনার সংক্রমণ প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে। এ কারণে জেলা পর্যায়ে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম সুসমন্বয়ের জন্য ৬৪ জেলায় ৬৪ জন সিনিয়র সচিব ও সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের দায়িত্ব দিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়, দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব/সচিবরা সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থার উপযুক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। নিয়োগ করা কর্মকর্তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন।
আদেশে বলা হয়, দায়িত্ব প্রাপ্ত সচিবগণ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয়সাধন করবেন। সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা/চ্যালেঞ্জ বা অন্য বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থাকে লিখিত আকারে জানাবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে নিয়মিত অবহিত করবেন।
আদেশে আরও বলা হয়, অবসর বা বদলির কারণে সিনিয়র সচিব/সচিবের দপ্তর পরিবর্তন বা পদ শূন্য হলে সেখানে নিযুক্ত সিনিয়র সচিব/সচিব দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে, করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে নতুন করে লকডাউন কার্যকর করবে সরকার। এটি হবে কঠোর ও কমপ্লিট লকডাউন। দ্রুতই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। শুক্রবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার ১৪ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে, যেটি হচ্ছে কমপ্লিট লকডাউন। সময় বাড়ানো হবে কি না তা নিয়ে ২০ তারিখে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের কাছে মেসেজ, সতর্ক থাকতে হবে, বাইরে আসা যাবে না। এটি অত্যন্ত কঠিন একটি লকডাউন। অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে, বাইরে আসা যাবে না। শুধু জরুরি সেবা চালু থাকবে। সব যানবাহনও বন্ধ থাকবে।
এর আগে শুক্রবার সকালে সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। কিন্তু এতেও কমেনি জনগণের উদাসীনতা। এ অবস্থায় জনস্বার্থে সরকার আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা ভাবনা করছে।
চলমান এক সপ্তাহের ‘লকডাউনে’ জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোন পরিবর্তন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গত ৪ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে সারাদেশে এক সপ্তাহ (৫-১২ এপ্রিল) গণপরিবহন, শপিংমল, বিনোদনকেন্দ্রসহ সবকিছু বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এক সপ্তাহের কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু বিধিনিষেধ কার্যকরের তিনদিনের মাথায় গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা চালু রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।
এরপর বৃহস্পতিবার শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে বেচাকেনা করতে হবে।
কে কোন জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন দেখুন এখানে>>>
Leave a Reply